টাঙ্গাইলের সখীপুরে বনাঞ্চল থেকে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার ঘোষণা প্রচারের প্রতিবাদে ওই উপজেলা বিএনপির বিক্ষোভ ও সমাবেশের পর বন বিভাগ মধুপুরেও একইভাবে বন থেকে বসবাসকারীদের উচ্ছেদ করার ঘোষণা মাইকিং করে প্রচার করেছে।
একইভাবে মধুপুর উপজেলা বিএনপিও এই উচ্ছেদ অভিযানকে অবৈধ ঘোষণা করে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেছে। গত দুইদিন এলাকায় মাইকিং করে প্রচার শেষে সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেলে বন এলাকার জলছত্র ফুটবল মাঠে এ সমাবেশের আয়োজন করে মধুপুর উপজেলা বিএনপি।
বনবিভাগ বলছে, সরকারি নির্দেশনা। অন্যদিকে বন এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, জীবন দিয়ে দিব, শত বছরের বাপ-দাদার ভিটে-মাটি ছাড়বো না।
বন বিভাগের সাথে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে বিএনপি মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। উপজেলার অন্তত ৫ টি বনঅধ্যুষিত ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ বিএনপির সমাবেশে যোগ দেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার অধিকাংশ বন ভূমি নিয়ে বনাঞ্চলে বসবাসরতদের সাথে বহুদিনের বিরোধ। অধিকাংশ ভূমি বন বিভাগের বলে দাবি করা হয়। আছে ১নং খাস খতিয়ানের জমিও। ব্যক্তি মালিকানার স্বপক্ষেও দাবি আছে বনের অভ্যন্তরে বসবাসরত স্থানীয়দের।
এসব জটিলতা অমীমাংসিত অবস্থায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে মধুপুর উপজেলার বন অঞ্চলের বিভিন্ন ইউনিয়নে সম্প্রতি বন বিভাগের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযানের মাইকিং করা হয়। উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যেই দু একটি বাড়ি ভেঙে দেয়ার খবরও জানা গেছে।
এরই প্রতিবাদে উপজেলা বিএনপি স্থানীয়দের নিয়ে
বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ফকির মাহবুব আনাম স্বপন।
তিনি বলেন, বনের বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করা হলে সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করা হবে। সমাবেশে কয়েক হাজার লোকদের উদ্দেশ্যে তিনি কাউকে হয়রানী করা হলে তাৎক্ষণিক তাকে মোবাইল করে তথ্য জানানোর আহবান করেছেন।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন সরকার সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। সহ-সভাপতি রতন হায়দারের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক উবায়দুল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক নাছিম সরকার, পৌর বিএনপির সভাপতি খুররম খান ইফসুফজী প্রিন্স।
এ বিষয়ে জানতে টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেনের মোবাইলে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তারও জবাব দেননি।
পরে সহকারী বন রক্ষক (এসিএফ) আশিকুর রহমানের সাথে যোাগাযোগ করলে তিনি বলেন, বন বিভাগের মামলার তালিকা অনুযায়ী নির্দেশনা মতে গাজীপুর, ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল বন বিভাগের উচ্ছেদ কার্যক্রম চলমান। তারই অংশ হিসেবে আইন অনুযায়ী সখীপুর, ঘাটাইল ও মধুপুরে কার্যক্রম চলছে।