২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার দুই দশক অতিক্রম করেছে। আজ এই নারকীয় ঘটনার ২১ বছর পূর্ণ হলেও বহুল আলোচিত মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) আসামিপক্ষের আপিল শুনানি সমাপ্ত হলে সর্বোচ্চ আদালত রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করবেন।
এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টে দেওয়া খালাসাদেশ বাতিল চেয়ে শুনানি শেষ করেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের খালাসাদেশ চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। বর্তমানে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যবিশিষ্ট আপিল বেঞ্চে মামলার চূড়ান্ত শুনানি চলছে।
আসামিপক্ষের দাবি, তারেক রহমানকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলায় জড়াতে দ্বিতীয় দফায় তদন্ত করানো হয় এবং জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানের জবানবন্দিকে গুরুত্ব দিয়ে রায় প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, ন্যায়বিচারের স্বার্থেই এ মামলার পুনঃবিবেচনা অপরিহার্য।
গত বছরের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার হত্যা ও বিস্ফোরক মামলায় তারেক রহমান, বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেন। এ রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের ডেথ রেফারেন্স নাকচ করা হয় এবং দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের দাখিল করা আপিলও মঞ্জুর হয়।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে এই গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে চালানো এই হামলায় আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত হন। হামলার পর হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়।
২০১৮ সালে বিচারিক আদালত রায় ঘোষণা করে। এতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং তারেক রহমানসহ আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। রায় ঘোষণার পর মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এখন সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের মাধ্যমেই এই বহুল আলোচিত মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।