বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত অংশ নিতে না পারলে দলটির সমর্থক বা ভোটাররা কীভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা-কল্পনা বেড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, কোনো একটি মতাদর্শের মানুষকে নির্বাচনের বাইরে রাখলে সেটি অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে না এবং এর প্রভাব ভবিষ্যতের রাজনীতিতেও পড়বে।
গত বছর আগস্টে আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাহী আদেশে দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে এবং নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন ও প্রতীক ‘নৌকা’ স্থগিত করে। পাশাপাশি দলটির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এই পরিস্থিতিতে দলটি যদি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, তবে তাদের সমর্থকরা ভোটে অংশ নেবে কীভাবে—এই প্রশ্ন উঠেছে নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক এক মতবিনিময় সভায়। যদিও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন এর আগে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা আশা করি আওয়ামী লীগের সমর্থকগোষ্ঠী ভোটে অংশ নেবে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ মনে করেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হতে হলে কাউকেই বাইরে রাখা যাবে না। তার মতে, যদি আওয়ামী লীগকে বাইরে রাখা হয়, তাহলে তাদের ভোটাররা হয়তো বিভিন্ন প্রার্থীর মধ্যে ভাগ হয়ে পড়বে বা একেবারেই ভোট দিতে যাবে না, যা নির্বাচনের ফল ও বৈধতা দুইয়ের ওপরই প্রভাব ফেলবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, “দেশের সংকটের মূল কারণই হলো সবাইকে নিয়ে নির্বাচন না হওয়া। আবারও যদি কোনো একটি মতাদর্শকে বাদ দেওয়া হয়, তাহলে সেটি ভবিষ্যতের জন্য নতুন রাজনৈতিক সমস্যার জন্ম দেবে।”
দলের ভেতরে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি বলে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দলীয় কর্মীরা ‘আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে নির্বাচন হবে না’—এই স্লোগান তুলেছেন, যদিও এর ভিত্তি স্পষ্ট নয়।