টাঙ্গাইলের মধুপুর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে জমি ক্রয়-বিক্রয়ের নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার দিনব্যাপী তদন্ত চালিয়ে প্রকাশিত সংবাদে উল্লিখিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেন দুদক কর্মকর্তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক টাঙ্গাইলের সহকারী পরিচালক নূরে আলম।
উল্লেখ্য, গত ২ অক্টোবর বিভিন্ন পত্রিকায় ‘ঘুষ ছাড়া দলিল হয় না মধুপুর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর দুদক বিষয়টি তদন্তে নেয়। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ২৮ সেপ্টেম্বর ৫৫ হাজার টাকা ঘুষ না দেওয়ায় আয়েজ উদ্দিন ও তার অপর ছয় অংশীদার জমির দলিল সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হন। ৮১ বছর বয়সী জমি বিক্রেতা আব্দুল মজিদকে নিয়ে তারা অফিসে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করেও দলিল নিবন্ধন করতে পারেননি। পরে তারা ৩০ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল জেলা রেজিস্ট্রার ও দুদকে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আয়েজ উদ্দিন আজাদসহ সাতজন অংশীদার মিলে মালাউড়ী গ্রামের আব্দুল মজিদের কাছ থেকে ছয় শতাংশ জমি ক্রয়ের চুক্তি করেন ৩১ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। প্রাথমিকভাবে এক লাখ টাকা বায়না প্রদান করা হয়। জমিটি মধুপুর পৌরসভার মালাউড়ী মৌজার ২২ নম্বর এস.এ খতিয়ান এবং বি.আর.এস ৭০৬ ও ৭৪৩ নম্বর দাগের অধীনস্থ জমি। জমির দলিলের যাবতীয় কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর সাবরেজিস্ট্রার অঞ্জনা রাণী দেবনাথ ভেন্ডারদের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে আরও জানানো হয়, ক্রেতাদের মধ্যে একজনের আয়কর সনদ না থাকায় অতিরিক্ত পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে। ৫৫ হাজার টাকা না দিলে দলিল সম্পন্ন হবে না বলে জানানো হয়।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদকের টাঙ্গাইল কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নূরে আলম ও উপসহকারী পরিচালক মো. আব্দুল বাছিদ তদন্তে অংশ নেন। তাঁরা জমির ক্রেতা-বিক্রেতা, দলিল লেখক, ভেন্ডার ও অফিসের কর্মচারিদের সঙ্গে কথা বলে এবং কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পান।
তদন্ত দলের ভাষায়, “অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযানের সময় সংগৃহীত রেকর্ডপত্র ও প্রমাণাদি যাচাই করে কমিশনের নিকট বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।” দুদক সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।