শনিবার রাতের ভয়াবহ সংঘর্ষে পাকিস্তানের ২৫টি সীমান্ত পোস্ট দখল এবং ৫৮ জন সেনা নিহত হওয়ার দাবি করেছে আফগানিস্তান। কাবুলে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এক লিখিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, শনিবার রাতের সংঘাতে আফগান সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকিস্তান সেনাদের হটিয়ে দেয়া হয়েছে। আফগান বাহিনীর তীব্র বন্দুক ও গোলাবর্ষণে কমপক্ষে ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত এবং আরও ৩০ জন আহত হয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, “পাকিস্তান যদি আবারও আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে, তবে আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।”
এর আগে তালেবান সরকার অভিযোগ করে যে, গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তান তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে সীমান্তের ভেতরে একটি বাজারে বোমা হামলা চালিয়েছে। ইসলামাবাদ এই হামলাকে ‘প্রতিশোধমূলক অভিযান’ বলে উল্লেখ করেছিল।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি বলেন, আফগান হামলাগুলো ‘বিনা উসকানিতে’ চালানো হয়েছে এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “আমরা প্রতিটি ইটের বিনিময়ে একটি পাথর দিয়ে জবাব দেব।”
ইসলামাবাদ অভিযোগ করেছে, কাবুলের মাটিতে পাকিস্তানবিরোধী সন্ত্রাসীরা আশ্রয় পাচ্ছে। তবে এই অভিযোগ সরাসরি অস্বীকার করেছে তালেবান সরকার।
বিবিসি সূত্রে জানা যায়, আফগান ও পাকিস্তানি বাহিনী উভয়ই সীমান্তবর্তী কুনার-কুররাম অঞ্চলে ভারী অস্ত্র ও কামান ব্যবহার করেছে। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাকভি বলেন, “আফগান বাহিনীর এই গুলিবর্ষণ আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।”
এক্স (টুইটার) পোস্টে নাকভি আরও বলেন, “আফগানিস্তান আগুন ও রক্তের খেলা খেলছে। পাকিস্তানের জনগণের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব।”
যদিও পাকিস্তান সেনাবাহিনী এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি, তবে নিরাপত্তা সূত্রগুলো জানিয়েছে যে সীমান্তের আঙ্গুর আড্ডা, বাজাউর, কুররাম, দির, চিত্রল এবং বারামচা এলাকায় ব্যাপক গুলিবিনিময় হয়েছে। কুররাম জেলার জিরো পয়েন্টে কর্মরত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “রাত বারোটা নাগাদ আফগানিস্তানের দিক থেকে ভারী অস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ শুরু হয়।”
এ সংঘর্ষে সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে স্থানীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।