বর্তমান যুব সমাজের মধ্যে আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানোর অসীম সাহসিকতার প্রতিফলন দেখছি। তারা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘাপটি মেরে বসে থাকা অন্যায় ও দূর্নীতিকে টেনে হিঁচড়ে বিদায় করতে পিছু হটবার নয়। সম্ভবনাময় যুব সমাজ এই সমাজ ও দেশ মাতৃকা নিয়ে বেশ সচেতন। তাদের ক্ষিপ্র মানসিকতা জাতির সামনে আশার সঞ্চার করে। তবে আশঙ্কার কথা, যুব সমাজের একটা বড় অংশ মাদকের বিষাক্ত ছোবলে দিশেহারা। মাদকের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকে। হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে অন্তঃসারশূন্য জীবে পরিণত হয়। ফলে সমাজে বাড়ে অস্থিরতা ও অপরাধ প্রবণতা। মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে অপকর্মে নিমজ্জিত হয়ে চলে যায় দিনের বেশীর ভাগ সময়। যা জাতীর জন্য অশনিসংকেত।
মাদকের ভয়াবহতা থেকে যুব সমাজের দৃষ্টি নিবন্ধ করতে ও সচেতনতা তৈরীর অভিপ্রায়ে অনবদ্য লেখনি "মাদকের ভয়াবহ ও ইসলাম কী বলে এবং আমাদের করনীয়"। বইটি পাঠ করলে মাদক সম্পর্কে আপনার সুস্পষ্ট ধারনার সৃষ্টি হবে। বইটিতে মাদকের শ্রেণি বিভাগ দেখানো হয়েছে সেই সাথে মাদক ও ওষুধের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা হয়েছে। যুব সমাজ ধ্বংসকারী মাদকের উৎসভূমি নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। প্রকৃত অর্থে মাদক যে শুধু যুব সমাজকে ঘায়েল করছে বিষয়টি এমন নয় বরং এহা পুরে মানবজাতির জন্য এক হুমকি। তামাক সম্পর্কে অনেকে সন্দেহের ঘোরে থাকে। আশা করা যায় বইটি অধ্যয়নে পাঠকের সেই ঘোর কাটবে এবং মাদক সম্পর্কে একটি ক্লিয়ার পিকচার ধারনার সৃষ্টি হবে। বইটির লেখক প্রফেসর ড.মো. আশেকুল হাসান মাদক গ্রহনের কুফল ও ভয়াবহতা এবং এর ব্যাপকতা নিয়ে বইটিতে বিস্তর লিখেছেন। মাদক ব্যক্তি জীবনের পাশাপাশি পারিবারিক ও সামাজিক জীবনকেও বিষিয়ে তোলে। মাদকের ছোবলে যে কত সহস্র নারী স্বামীর ঘর ছারা হয়েছে তার হদিস নেই। বর্তমান সমাজে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারন মাদক। মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি কিংবা খুনের মতো ঘটনা আমাদের সমাজে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এমনকি মাদকের টাকার জন্য নিজের মমতাময়ী মাকেও রেহায় দিচ্ছে না কথিত মাদক সেবীরা। মাদক সম্পর্কে ইসলামের অবস্থান ও ইসলাম কী বলে এ বিষয়ে বইটি অধ্যয়নে স্পষ্ট ধারনা জন্মাবে। যার ফলে পাঠক মাদকের ভয়াবহতা ও কুফল সম্পর্কে হবে সচেতন এবং মাদক গ্রহনে থেকে থাকবে বিরত। বইটিতে আরো জানতে পারবেন মাদক গ্রহনে প্রচলিত আইনে শাস্তির বিধান। পরিশেষে মাদকের ভয়াবহ কুফল থেকে মুক্তির উপায় এবং আমাদের করনীয় বিষয়ে অবগত হতে পারবেন।
মাদকের নীল বিষ রশ্মি মানুষকে কখনো সুখের পথ বাতলে দিতে পারে না। মাদক জীবনে আনে ধ্বংস ও সর্বনাশ। যা সাজানো জীবনকে তছনছ করে দেয়। জীবনে সুখ ও সমৃদ্ধি অর্জন করতে হলে মাদক থেকে আমাদের দূরে থাকতে হবে। বইটি পাঠ করলে পাঠক মাদকের ভয়াবহতা জানতে পারবে এবং এর কুফল সম্পর্কে অবগত হয়ে মাদক থেকে দূরে থাকার রসদ পাবে। সেই সাথে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারবে। মনে রাখা বাঞ্ছনীয় মাদক এক প্রকার বিষ যা জীবনকে বিষিয়ে তোলে। সঠিক পথের নাবিকেও দিকভ্রান্ত করে তোলে।
টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতি উপজেলার পারখী গ্রামে জন্মগ্রহণকারী সৃজনশীল লেখক প্রফেসর ড. মো. আশেকুল হাসান। ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি পিতা মরহুম আলহাজ্ব মো. বুজর্গ আলী ও মাতা: মরহুমা রোকেয়া বেগমের কোল আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। গ্রামে তিনি এ. মালেক নামে পরিচিত পান । বর্তমানে তিনি সরকারি সা'দত কলেজ, করটিয়া, টাঙ্গাইলে ব্যবস্থাপনা বিভাগে অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন। অধ্যাপনা, গবেষণা ও লেখালেখির পাশাপাশি বর্তমানে তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান; মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, স্কুল, কলেজ, পাঠাগার, মানবাধিকার সংগঠনসহ বহুমুখী সামাজিক কর্মকাণ্ডে ওতপ্রোতভাবে জড়িত থেকে সামাজিক কল্যাণ সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। উল্লেখ্য যে, তাঁর লেখা কয়েকটি বইয়ের পাণ্ডুলিপি প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। বিবাহিত জীবনে তিনি এক কন্যা সন্তানের জনক।
লেখকের ভাষ্য অনুযায়ী, ‘মাদকের ভয়াবহতা: ইসলাম কী বলে এবং আমাদের করণীয়’ চারিদিকে শুধু চাপা কান্না, দুঃখ, কষ্ট ও ক্ষোভ। আমার ছেলেটি লেখাপড়া, কাজকর্ম করে না, বখাটে ছেলেদের সাথে মিশে আড্ডা দেয়, গভীর রাতে বাড়ি ফিরে, মেজাজ খিটমিটে, মারামারি করে, চুরি-ছিনতাইয়ের সাথে জড়িয়ে পড়েছে, চারদিক থেকে অভিযোগ আসে সে সন্ত্রাসের সাথেও যুক্ত অথবা বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে জীবন সায়াহ্নে উপনীত হয়েছে। কারণ সে নেশা করে। চাকুরিরত ছেলেটি পিতা-মাতা ও পরিবার পরিজনকে টাকা পাঠায় না, কারণ সে নেশা করে। পাশের বাড়ির মেয়েটির বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। কারণ ছেলেটি নেশা করে। এই হলো হালজামানার ব্যক্তি ও সমাজের চিত্র।