প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চলমান বার্ষিক পরীক্ষায় বুধবার প্রাথমিক বিজ্ঞান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মধুপুরের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা গ্রহণ থেকে বিরত থাকায় এ শাটডাউন পরিস্থিতি তৈরি হয়।
গত দুই দিন ধরে বিকল্প ব্যবস্থায়—সাবেক ছাত্র, অভিভাবক, কর্মচারী ও আয়াদের দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হলেও বুধবার কেন্দ্রীয় ঘোষণায় সহকারী শিক্ষকরা সম্পূর্ণভাবে পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছেন।
বুধবার দুপুরে মধুপুর উপজেলা প্রশাসন চত্বরে সহকারী শিক্ষকরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। তারা শুধু পরীক্ষায় অংশ না নেওয়ার ঘোষণা নয়, বরং পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে না দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন। পরে উপজেলা শিক্ষা অফিসের সামনে সমবেত হয়ে তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন।
সহকারী শিক্ষক ফররুখ আহমেদ, মামুন, কবির উদ্দিনসহ অনেকে জানান, “সহকারী শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে সরকারের এমন গড়িমসি দুঃখজনক। ১০ম গ্রেডের দাবির জায়গায় ১১তম গ্রেড দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরকার, সেটিও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এটা আমাদের মর্যাদার বিষয়—২০/৫০ টাকা বেতন বৃদ্ধির জন্য নয়।”
এদিকে প্রধান শিক্ষকরা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে বুধবার পরীক্ষা নিতে না পারার কারণ উল্লেখ করে লিখিত দিয়েছেন। জানিয়েছেন সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলনে পরীক্ষা গ্রহণ করা যায়নি। মসজিদ চালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমন লিখিত দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন।
পশ্চিম জটাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ সুজা, কালামাঝি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজগর আলী বলেন, “আজ বুধবার শিশুদের প্রাথমিক বিজ্ঞান পরীক্ষা ছিল। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী সহকারী শিক্ষকরা পরীক্ষা বন্ধ করে শাটডাউন কার্যকর করেছেন।”
শিক্ষকদের অব্যাহত কর্মবিরতি ও পরীক্ষা বর্জনের কারণে মধুপুরের শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাড়ে ১১ হাজার শিক্ষার্থীর বার্ষিক মূল্যায়ন অনিশ্চয়তায় পড়েছে। দাবি আদায়ের আগে পরীক্ষা শুরু হবে কি না—এ নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মির্জা জুবায়ের হোসেন তার অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে পরীক্ষা গ্রহণের সরকারি নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে সংশ্লিষ্টদের প্রতি ৬ টি নির্দেশনা দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করার অনুরোধ করেছেন।
তিনি লিখেছেন, "অভিভাবকদের মনোক্ষুণ্ণ করে, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করে এবং কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বাঁধাগ্রস্ত করে কোনো দাবী আদায় করা কোন ভাবেই কাম্য নয়।"