টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলমান তারুণ্য উৎসবে যুক্ত হওয়া ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উপলক্ষ্যে দুইদিনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা সমাপ্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে পুরষ্কার বিতরণ ও সংগীত পরিবেশনায় শেষ হলো তারুণ্য উৎসবের এই উৎসবমুখর মেলার কার্যক্রম।
শেষ দিনে মেলার মঞ্চে পরিবেশিত সংগীতে মাতোয়ারা ছিল তরুণ শিক্ষার্থীরা। নেচে গেয়ে তারা মেলার ক্যাম্পাস ও তার আশপাশে তারুণ্য উচ্ছ্বাসের ঢেউ বইয়ে দিয়ে ছিল। যা উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল মেলায় আগত সব বয়সীদের কাছে।
“জ্ঞান বিজ্ঞানে করবো জয়, সেরা হবো বিশ্বময়” প্রতিপাদ্যে উপজেলা প্রশাসন দুইদিনের এ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা এবং সাথে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখার প্রয়াসে পিঠা উৎসবেরও আয়োজন করেছিল। দুই দিনই উৎসব মুখর পরিবেশ ছিল মেলা জুড়ে।
বুধবার মধুপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন বেলুন উড়িয়ে ওই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং পিঠা উৎসেবর উদ্বোধন করেন।
"এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই" মূল স্লোগানে নতুন বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে তরুণ সমাজকে জ্ঞানচর্চায় উদ্বুদ্ধ করতে মাসাধিকাল ব্যাপি কর্মসূচি চলমান। কিশোর তরুণদের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে বিকশিত করার সুযোগ সৃষ্টিতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষে জাতীয় বিজ্ঞান ও জাদুঘর এ মেলার আয়োজনে মূলত মূখ্য ভূমিকায় থাকলেও বাস্তবায়নে কাজ করেছে উপজেলা প্রশাসন। এ মেলা তার ধারাবাহিকতা। উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গঠিত বিজ্ঞান ক্লাবের সংশ্লিষ্ট শিক্ষক শিক্ষার্থীরা মেলায অংশ নিয়ে বিজ্ঞানে নিজেদের উদ্ভাবনী প্রকল্প(প্রজেক্ট) উপস্থাপন করেছেন। উপস্থাপনায় কলেজ পর্যায়ে "বর্জ্য পরিশোধন ও শক্তি উৎপাদন" প্রকল্পে প্রথম পুরষ্কার মহিষমারা কলেজের বিজ্ঞান শিক্ষার্থীরা ছিনিয়ে নিলেও মেলায় উপস্থাপিত যুদ্ধের মিশাইল নিয়ন্ত্রণের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা, রোবটের নিয়ন্ত্রণ, বিদ্যুৎ জ্বালানী সাশ্রয়ের প্রকল্প, আদর্শ গ্রাম ব্যবস্থাসহ বিজ্ঞানের নানা প্রজেক্ট মেলার দর্শনার্থীদের অভিভূত করে। মেলার কুইজ প্রতিযোগিতার বিজ্ঞান ও জ্ঞান ভিত্তিক প্রশ্ন এবং তার উত্তর শিক্ষার্থীসহ অনেককে সমৃদ্ধ করেছে। মেলায় বিজ্ঞান ক্লাবের উদ্যোগে বস্তুর কণা "ফোটন" নামের প্রথম ম্যাগাজিন শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান মনস্ক করে তোলার প্রয়াস প্রশংসিত হয়েছে। মেলারএকই মাঠেই ছিল পিঠা উৎসবের আয়োজন। গ্রাম বাংলা ও আধুনিক পিঠা পুলির আয়োজনে মুগ্ধ হয়েছে ছোট বড় দর্শকরা। নকশীকাঁথাসহ অন্যান্য সামগ্রীর প্রদর্শনী ছিল মেলার বাড়তি আর্কষণ। মেলার ২২ টি স্টলে এ সব প্রদর্শিত হয়েছে । পুরষ্কার হাতে পেয়ে শুধু বিজয়ীদের মুখে উচ্ছ্বাসের চিহ্ন ছিল এমন নয়, কমন পুরষ্কার পেয়ে হাসির রেখার ছাপ ফুটে উঠেছিল অন্যদের মুখমন্ডল জুড়ে। সর্বশেষ জাঁক জমক পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে একে একে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মঞ্চে উঠে। তাদের পুরষ্কার গ্রহণের দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করার প্রতিযোগিতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়া।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের হোসেন। একাডেমিক সুপারভাইজর মহিউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুর রহমান, শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র কর,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্লাবের সভাপতি ফজলুল হক , মধুপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হাবিবুর রহমান সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম শহীদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সবুজ মিয়া, মাজাহার, মেহেদী হাসান মৃদুল,জিহাদ হাসান জীম, নাঈম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক শিক্ষার্থী, সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, সামাজিক,সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ মিডিয়াকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।