মধুপুরে ডলার বেচাকেনার হাট:
সোয়া১৫ লাখ টাকাসহ মোবাইল ছিনতাই, এক প্রতারকের স্বীকারোক্তি
- আপডেট সময় : ১২:৪২:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫ ৪৯ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের মধুপুর বনাঞ্চলে ডলার কেনাবেচার প্রলোভনে ডেকে নিয়ে এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ঘটনার পর পরই পুলিশের অভিযানে প্রতারক চক্রের এক সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে, যিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ঘটনার চারদিনের মাথায় শুক্রবার মামলা দায়ের এবং ওইদিনই আটক ব্যক্তিকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সন্ধ্যায় ম্যাজিস্ট্রট আদালতে আটক অভিযুক্ত চক্রের ওই সদস্য আমিনুল ইসলাম ( সোহরাব) স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন।
প্রতারিত রুবেল পাইক পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলার গোপালপুর গ্রামের
পরিমল চন্দ্র পাইকের ছেলে। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের পুলিশ লাইন সংলগ্ন ওয়ারেস গেইট এলাকায় বসবাস করেন। তিনি গত ১৭ নভেম্বর টাঙ্গাইলের মধুপুরে এসে প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে ১৫ লাখ ২৫ হাজার টাকাসহ নিজের ও সাথীদের মোবাইল খুঁইয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ নভেম্বর রুবেল ও পাবনার আতাইকুলা উপজেলার গয়েশবাড়ী গ্রামের মুশফিকুর, শফিকুর নামের বন্ধুদের নিয়ে মধুপুর বনাঞ্চলে আসেন। ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার দুল্লা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে জুলহাসের আহ্বানে প্রতারকরা প্রতি ডলার ২০ টাকায় বিক্রির প্রলোভন দেখায়। জুলহাসের সঙ্গে ছিল মধুপুরের ভুটিয়া গ্রামের আমিনুল ইসলাম ওরফে সোহরাব, মুক্তাগাছার সহোদর আব্দুল হালিম, কল্পনা, বানারপাড়ার মোস্তফা এবং আরও কয়েকজন অজ্ঞাত ব্যক্তি।
রুবেল জানান, তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা ১৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে ডলার কিনতে ভুটিয়া এলাকায় গেলে প্রতারকচক্র তাদের আটকে টাকা ছিনিয়ে নেয়। এছাড়াও রুবেলসহ তিনজনের কাছে থাকা ৬টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতকারীরা।
ঘটনার পর রুবেল পাইক মধুপুর থানায় মামলা করলে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে ভুটিয়া এলাকা থেকে আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
শুক্রবার টাঙ্গাইল জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাকে হাজির করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুমেলিয়া সিরাজাম তাঁর জবানবন্দি গ্রহণ করে আমিনুলকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
স্থানীয় অনেকে জানান, দীর্ঘ দিন থেকে মধুপুর বন এলাকায় ডলার প্রতারণার নানা ঘটনার কথা শোনা যায়। একাধিক বড় ঘটনাও ঘটেছে। বন এলাকা অনেকটা ডলার কেনাবেচার হাট। প্রতারিতরা লোভে পড়ে এখানে আসেন। প্রতারণার শিকার হয়ে বড় অংকের টাকা খুঁয়ালেও লজ্জা ও পুলিশী ঝামেলার ভয়ে বেশির ভাগ ঘটনার জন্য মামলা হয় না।
মধুপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ওসি (তদন্ত) রাসেল আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে চক্রটির সদস্যদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে এ চক্রটি মধুপুর বনাঞ্চলে ডলার বেচাকেনার নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে।”
পুলিশ জানায়, চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

















