ঢাকা ০৪:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপজেলা প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরেও স্বাধীনতার স্মৃতির মিনার হয়নি

উপজেলা প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরে স্বাধীনতার স্মৃতির মিনার হয়নি

শালবন রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : ১০:৩২:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ৭৮ বার পড়া হয়েছে

ধনবাড়ীতে বিজয় দিবসে ভাষা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন

২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেড় যুগ হচ্ছে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা প্রতিষ্ঠার বয়স। নতুন এ উপজেলার এক এক করে অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে। উপজেলা শহর হিসেবে সেজেছে ধনবাড়ী। যুগপৎ পৌরসভা ও উপজেলার উন্নয়নে এক সময়ের ধনবাড়ী ইউনিয়ন উপজেলা নামে নতুন রূপে সেজেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে টানা ক্ষমতায় থাকা আ’লীগের এ আসনের(টাঙ্গাইল-১ মধুপুর-ধনবাড়ী) এমপি একে একে দুইবার মন্ত্রী হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বক্তৃতায় মঞ্চ গরম হয়েছে। কিন্তু এ দেড় যুগেও উপজেলা শহরে একটি স্বাধীনতার স্মৃতির মিনার হয়নি।

জাতীয়ভাবে পৃথক স্মৃতির মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের রেওয়াজ থাকলেও প্রতি বছর ধনবাড়ীতে জাতীয় দিবস স্বাধীনতা দিবস,বিজয় দিবসে শহীদদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে ভাষার শহীদ মিনারে। কারো চোখেই যেন ধরা পড়েনি। কেন্দ্রীয় আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা ড.আব্দুর রাজ্জাক মন্ত্রী থাকাকালীনও বিষয়টি উপেক্ষিত থেকেছে। এবারও তার ব্যতয় ঘটেনি। শুধু স্থান পরিবর্তন হয়েছে।এর আগে নবাব নওয়াব ইনস্টিটিউটের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হতো।

উপজেলা প্রশাসনের কর্মসূচি অনুযায়ী এবারের বিজয় দিবসে(সোমবার) সূর্যোদয়ের সাথে সাথে উপজেলা ক্যাম্পাসের শহিদ মিনারে শহিদদের উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক অর্পন, তাঁদের আত্নার মাগফেরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।গত শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসেও এখানে শ্রদ্ধা নিবেদন হয়েছে।

অন্যকোন স্থাপনা বা স্মৃতির মিনার না থাকায় এমনভাবে কর্মসূচি সাজানোর কথা জানিয়েছেন ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সম্প্রতি যোগদান করা আবু সাঈদ। এ নিয়ে স্থানীয় অনেকের সাথে কথা হয়েছে। সবাই জানেন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির মিনার ধনবাড়ীতে নির্মাণ হয়নি। কিন্তু কারণ ব্যখ্যায় বিব্রত সবাই।

উপজেলা পর্যায়ের প্রথম শ্রেণির এক কর্মকর্তা বিষয়টি জানার পর যেন বিষম খেলেন। ধনবাড়ীতে স্মৃতির মিনার নেই এটি তার অজানা বলে জানান।

ধনবাড়ী সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফজলে মাহমুদ মনে করেন, দিবস ভিত্তিক এমন কর্মসূচি পালনের পর আর কোন চর্চার জাযগা নেই। ফলে বিষয়টি হয়ত কারো নজরে আসেনি। তবে তিনি মনে করেন, আলাদা স্মৃতির মিনার থাকা প্রয়োজন। সরকারিভাবে এটি উদ্যোগ নিতে হবে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক সাবেক প্রধান শিক্ষক বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনিও এটি না থাকার কারণ বলতে পারেননি।

পৌর বিএনপির সভাপতি ও ধনবাড়ী কলেজের সাবেক জিএস এসএমএ সোবহান জানান, পতিত আ’লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও বাস্তবে চেতনার কাজ তারা করেনি। জনগণের আবেগ কাজে লাগিয়ে এবং অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে তারা চেতনা বিরোধী কাজ করেছে। নেতাকর্মীরা ছিলেন অর্থ লোপাটে ব্যস্ত। তার দৃষ্টান্ত- ধনবাড়ী উপজেলা প্রতিষ্ঠার ১৮ বছর (স্থাপিত ২০০৬) অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকেও মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতি স্তম্ভ তৈরি করতে পারেনি।

ধনবাড়ী পৌর শহরের বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র জানান, ধনবাড়ীতে মুক্তিযুদ্ধের শহিদ মিনার নেই। এটা খুবই লজ্জার। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দাবিদার দলের গত ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতা কালে নেতারা ছিল লুটপাটে ব্যস্ত। লুটপাট করে অনেতা কথিত নেতায় পরিণত হয়েছে। তাদের চিন্তায় এমন সৃষ্টির কথা আসেনি।

তিনি বলেন, এখন প্রশাসনের উচিত স্মৃতির মিনার নির্মাণ করা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ জানান, এটা জাতীয় উদ্যোগের ইস্যু। নিশ্চয়ই সরকার ভবিষ্যতে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করবে। তখন উপজেলা প্রশাসন স্থান নির্বাচনে সহায়তা করবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

উপজেলা প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরেও স্বাধীনতার স্মৃতির মিনার হয়নি

উপজেলা প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরে স্বাধীনতার স্মৃতির মিনার হয়নি

আপডেট সময় : ১০:৩২:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ধনবাড়ীতে বিজয় দিবসে ভাষা শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন

২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দেড় যুগ হচ্ছে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলা প্রতিষ্ঠার বয়স। নতুন এ উপজেলার এক এক করে অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে। উপজেলা শহর হিসেবে সেজেছে ধনবাড়ী। যুগপৎ পৌরসভা ও উপজেলার উন্নয়নে এক সময়ের ধনবাড়ী ইউনিয়ন উপজেলা নামে নতুন রূপে সেজেছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে টানা ক্ষমতায় থাকা আ’লীগের এ আসনের(টাঙ্গাইল-১ মধুপুর-ধনবাড়ী) এমপি একে একে দুইবার মন্ত্রী হয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বক্তৃতায় মঞ্চ গরম হয়েছে। কিন্তু এ দেড় যুগেও উপজেলা শহরে একটি স্বাধীনতার স্মৃতির মিনার হয়নি।

জাতীয়ভাবে পৃথক স্মৃতির মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের রেওয়াজ থাকলেও প্রতি বছর ধনবাড়ীতে জাতীয় দিবস স্বাধীনতা দিবস,বিজয় দিবসে শহীদদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে ভাষার শহীদ মিনারে। কারো চোখেই যেন ধরা পড়েনি। কেন্দ্রীয় আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা ড.আব্দুর রাজ্জাক মন্ত্রী থাকাকালীনও বিষয়টি উপেক্ষিত থেকেছে। এবারও তার ব্যতয় ঘটেনি। শুধু স্থান পরিবর্তন হয়েছে।এর আগে নবাব নওয়াব ইনস্টিটিউটের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানানো হতো।

উপজেলা প্রশাসনের কর্মসূচি অনুযায়ী এবারের বিজয় দিবসে(সোমবার) সূর্যোদয়ের সাথে সাথে উপজেলা ক্যাম্পাসের শহিদ মিনারে শহিদদের উদ্দেশ্যে পুষ্পস্তবক অর্পন, তাঁদের আত্নার মাগফেরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।গত শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসেও এখানে শ্রদ্ধা নিবেদন হয়েছে।

অন্যকোন স্থাপনা বা স্মৃতির মিনার না থাকায় এমনভাবে কর্মসূচি সাজানোর কথা জানিয়েছেন ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সম্প্রতি যোগদান করা আবু সাঈদ। এ নিয়ে স্থানীয় অনেকের সাথে কথা হয়েছে। সবাই জানেন মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতির মিনার ধনবাড়ীতে নির্মাণ হয়নি। কিন্তু কারণ ব্যখ্যায় বিব্রত সবাই।

উপজেলা পর্যায়ের প্রথম শ্রেণির এক কর্মকর্তা বিষয়টি জানার পর যেন বিষম খেলেন। ধনবাড়ীতে স্মৃতির মিনার নেই এটি তার অজানা বলে জানান।

ধনবাড়ী সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফজলে মাহমুদ মনে করেন, দিবস ভিত্তিক এমন কর্মসূচি পালনের পর আর কোন চর্চার জাযগা নেই। ফলে বিষয়টি হয়ত কারো নজরে আসেনি। তবে তিনি মনে করেন, আলাদা স্মৃতির মিনার থাকা প্রয়োজন। সরকারিভাবে এটি উদ্যোগ নিতে হবে। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক সাবেক প্রধান শিক্ষক বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনিও এটি না থাকার কারণ বলতে পারেননি।

পৌর বিএনপির সভাপতি ও ধনবাড়ী কলেজের সাবেক জিএস এসএমএ সোবহান জানান, পতিত আ’লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও বাস্তবে চেতনার কাজ তারা করেনি। জনগণের আবেগ কাজে লাগিয়ে এবং অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে তারা চেতনা বিরোধী কাজ করেছে। নেতাকর্মীরা ছিলেন অর্থ লোপাটে ব্যস্ত। তার দৃষ্টান্ত- ধনবাড়ী উপজেলা প্রতিষ্ঠার ১৮ বছর (স্থাপিত ২০০৬) অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকেও মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতি স্তম্ভ তৈরি করতে পারেনি।

ধনবাড়ী পৌর শহরের বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র জানান, ধনবাড়ীতে মুক্তিযুদ্ধের শহিদ মিনার নেই। এটা খুবই লজ্জার। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দাবিদার দলের গত ১৫ বছরের কর্তৃত্ববাদী ক্ষমতা কালে নেতারা ছিল লুটপাটে ব্যস্ত। লুটপাট করে অনেতা কথিত নেতায় পরিণত হয়েছে। তাদের চিন্তায় এমন সৃষ্টির কথা আসেনি।

তিনি বলেন, এখন প্রশাসনের উচিত স্মৃতির মিনার নির্মাণ করা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ জানান, এটা জাতীয় উদ্যোগের ইস্যু। নিশ্চয়ই সরকার ভবিষ্যতে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করবে। তখন উপজেলা প্রশাসন স্থান নির্বাচনে সহায়তা করবে।