ঠান্ডা বাতাস শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিচ্ছে বহুগুণ
দেখা নেই সূর্যের, তীব্র শীতে কাঁপছে সারাদেশ
- আপডেট সময় : ০৯:২০:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী ২০২৫ ৫১ বার পড়া হয়েছে
পৌষের মাঝামাঝি সারা দেশেই জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশার সাথে ঠান্ডা বাতাসে তীব্র হচ্ছে শীতের প্রকোপ। এরই মধ্যে দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে প্রতিদিনই নামছে তাপমাত্রার পারদ। আর কুয়াশার প্রভাবে ব্যাহত হচ্ছে যানবাহন চলাচল। হাসপাতালে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা।
রাজধানী ঢাকাতে গত কয়েকদিন সেভাবে শীতের আঁচ টের পাওয়া যায়নি। তবে নতুন বছর থেকে যেন শীতের অনুভূতি বেড়েছে রাজধানীতে। গত কয়েক দিনের তুলনায় ঢাকাবাসী শীত অনুভব করছেন বেশি। তাপমাত্রাও বলছে সে কথা। উত্তরের বিভিন্ন জেলায় শীত যেন জেঁকে বসেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) ভোর থেকে কুয়াশায় আবৃত ঢাকা। এর সঙ্গে ঠান্ডা বাতাস শীতের তীব্রতা বাড়িয়ে দিচ্ছে বহুগুণ। দেখা মেলেনি সূর্যের। ঘন কুয়াশার কারণে দেশের কোথাও কোথাও কয়েকদিন পর্যন্ত শীতের অনুভূতি থাকতে পারে।
ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল জেলার মধুপুর উপজেলা সহ প্রতিটি উপজেলায় শীতের তীব্র অনুভূতিতে জনজীবনে ভোগান্তি নেমে এসেছে।
রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর এবং রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ, পাবনা, নাটোরসহ প্রায় সব জেলাতেই জেঁকে বসেছে শীত। হিমেল হাওয়া ও কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকছে ৯ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। শীতে কাবু হয়ে পড়েছে শিশুসহ নানা বয়সী মানুষ।
পঞ্চগড়ে শৈতপ্রবাহের কারণে হাড় কাঁপানো শীত অনুভূত হচ্ছে। আগুন জালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকে। বেশি দুর্ভোগে পড়েছে দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক, পাথর শ্রমিক, রিকশা ভ্যান চালকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ।
রাজশাহী বিভাগের নওগাঁ, পাবনা, নাটোরে পারদ নেমেছে ১০ ডিগ্রির নিচে। সারা দিনেও দেখা মিলছে না সূর্যের। এছাড়া ঘন কুয়াশায় দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যানবাহনকে।
দক্ষিণাঞ্চলের যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়াতে শীতের প্রকোপে অসুস্থ হচ্ছে নানা বয়সী মানুষ। হাসপাতালে প্রতিদিনই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে। এছাড়া রয়েছে শৈত্যপ্রবাহের আভাস।
এদিকে, সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারে তাপমাত্রা নেমেছে ৯ডিগ্রির নিচে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগেও বেড়েছে শীতের প্রকোপ।
আবহাওয়া অধিদফতরের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নতুন বছরের প্রথম দিন বুধবার (১ জানুয়ারি) রাজধানীতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে এসেছে ৫ ডিগ্রিতে। যা কয়েকদিন আগেও ১০ ডিগ্রির বেশি ছিল।
বুধবার ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যান্য বিভাগের তাপমাত্রার ক্ষেত্রেও চিত্র ছিল প্রায় একই।
এদিকে, জানুয়ারি মাসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ওপর দিয়ে তিন থেকে পাঁচটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে বাড়বে শীত এবং তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামতে পারে।
জানুয়ারি মাসে দেশের পশ্চিম, উত্তর ও উত্তরপূর্বাঞ্চলে এক থেকে দুটি মাঝারি থেকে তীব্র এবং দেশের অন্যান্য এলাকায় দুই থেকে তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকলেও দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকার কারণে এ সময়ে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে– এ মাসে দেশের পশ্চিম, উত্তর ও উত্তরপূর্বাঞ্চলে দুয়েকটি মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) থেকে তীব্র (৪ থেকে ৬ ডিগ্রি) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এছাড়া, দেশের অন্যান্য অঞ্চলে দু-তিনটি মৃদু (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি) থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।