মধুপুরে ঐতিহ্যের গোষ্ঠ অষ্টমী উৎসব পালিত
- আপডেট সময় : ০৯:১৫:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫ ৩০৩ বার পড়া হয়েছে

নানা আনুষ্ঠানিকতায় টাঙ্গাইলের মধুপুরে হিন্দুদের গোষ্ঠ অষ্টমী পালিত হয়েছে । তিথির হিসেবে বুধবার সকাল থেকে মধ্যরাত অবধি নানা কর্মসূচিতে এ গোষ্ঠ অষ্টমী পালিত হলো। এ দিনকে ঘিরে এক সময় মাসব্যাপি মদন গোপাল মন্দিরের মাঠে গোষ্ঠ মেলা চলত। কিন্তু এখন আর সেটা হয় না। মন্দিরের সুবিস্তৃত জায়গা বেদখলে যাওয়ায় এখন মাসব্যাপি ওই মেলা শুধুই স্মৃতি।
আয়োজক সূত্র জানায়, তিথি অনুযায়ী(অষ্টমী তিথি)গোষ্ঠ অষ্টমী দিনে সকালে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের বর্ণিল সাজে, রঙ বেরঙের পতাকা হাতে (কৃষ্ণ) রাখালী(রুক্কুনী) সাজানো রাখালদের একটি শোভাযাত্রা বের হয়। ভোগদান হয় দুপুরে। এর আগে সকালে নিত্য পুজা দিয়ে শুরু হয় কর্মসূচি। মহারাণী হেমন্ত কুমারীর মদন গোপাল আঙ্গিনা থেকে নাটু গোপালকে (সাজানো বালক কৃষ্ণ) সাথে নিয়ে মন্দিরে আনা হয়। মদনগোপাল আঙিনার ওই মন্দির থেকে পরে শ্রীকৃষ্ণকে আরেকটি (কুঞ্জ) মন্দিরে (মধুপুর ক্লাব সংলগ্ন) নিয়ে আসা হয়। রুক্কুনীকে রাখা হয় কুঞ্জ মন্দিরের বিপরীত দিকের আরেকটি মন্দিরে। পরে পূর্ব নির্ধারিত ধান ক্ষেতে নিয়ে যাওয়া হয় ক্ষুদে রাখাল দলকে। ধান ক্ষেতে দীর্ঘক্ষণ অবস্থানকালীন ক্ষেতের চারিদিক সাত বার প্রদক্ষিণ করে রাখালেরা গরুকে ধান খাওয়াতে শুরু করে। এসময় মায়েরা কেউ পুত্র কামনায় আবার কেউ পুত্র বাৎসল্যে রাখালদের আদর করে বিভিন্ন রকমের মিষ্টি খাওয়ান। পরে সেখান থেকে মন্দিরে ফিরে রাখালদের মাঝে প্রসাদ বিতরণের মধ্যদিয়ে শেষ হয় দিনের প্রথম পর্ব। দ্বিতীয় পর্বে সন্ধ্যায় মন্দিরে জ¦ালানো হয় মঙ্গল প্রদীপ।
শ্রীকৃষ্ণ আর রুক্কুনির মধ্যে জাগতিক বিয়ে পর্বে থাকে রুক্কনী-শ্রীকৃষ্ণের বিবাহোত্তর প্রতীকি মিলন অনুষ্ঠান। রাত সাড়ে ১০ টায় শুরু হয়ে পৌনে ১২ টা পর্যন্ত মিলন অনুষ্ঠানে আনন্দ আর উল্লাসে মেতে উঠে আবাল বৃদ্ধ বনিতা। এর আগে সন্ধ্যা থেকে মদন গোপাল বিগ্রহ মন্দিরের ভিতরে দীর্ঘক্ষণ চলে ধর্মীয় সংগীত পরিবেশন। নাটু গোপাল রূপী শ্রীকৃষ্ণ ও রুক্কনীকে মিলন ঘটাতে চলে আনন্দ উল্লাস। এক ঘন্টার এ উৎসব উল্লাস শেষে মধুপুর পৌর শহরের সাথী সিনেমা রোডের বটতলা(মিলনতলা) মিলন ঘটানো হয়। হাজার হাজার দর্শনার্থীর সমবেত হয় এ দৃশ্য দেখেন। এ উৎসবে যোগ দিতে দূরদূরান্ত থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বী (হিন্দু) ভক্তরা মধুপুরের আতœীয় বাড়িতে নাইওর আসতেন। পূরবী(উপহার) দেওয়া হতো আগতদের। এখনও সে চর্চা আছে শুধু গোষ্ঠ অষ্টমী উৎসবকে কেন্দ্র করে।
রাতের মিলন অনুষ্ঠানে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মির্জা মো. জুবায়ের হোসেন. মধুপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এমরানুল কবিরসহ হিন্দু নেতৃবৃন্দদের পাশে স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।



















