বিএনপি নেতা বহিষ্কার
ধনবাড়ীতে ইমাম লাঞ্ছিত, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ, বিচারের আশ্বাসে প্রত্যাহার

- আপডেট সময় : ০৬:১৩:৪১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ১৮০ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী পৌর শহরের বাজার মসজিদের ইমাম মাও. মাহমুদুল হাসান উপজেলা বিএনপির এক নেতার নাতির কাছে লাঞ্ছিতের ঘটনার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে ইমাম-মুয়াাজ্জিন পরিষদ ধনবাড়ী শাখা। আমজাদ হোসেন নামের ওই নেতা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি। এ ঘটনায় তাকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে দল।
বুধবার (১৫ অক্টোবর ) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী টাঙ্গাইল- জামালপুর-সড়কের ধনবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করে আন্দোলনকারীরা। অবরোধর দুই পাশে কয়েক কি. মি. সড়কে যানবাহন আটকে যানজটে যাত্রী দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয় কর্মসূচি থেকে। প্রতিবাদের মুখে ধনবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ এম আজিজুর রহমান উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আমজাদ মেম্বারকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়ে পরিবেশ শান্ত করেন। এ সময় ধনবাড়ীর ইউএনও মো. শাহীন মাহমুদসহ পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তাদের পক্ষ থেকেও সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করে তাদের অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে।ব্যবস্থা না নিলে আবারো আন্দালনে নামার হুমকিও দেয়া হয়েছে কর্মসূচি থেকে।
লাঞ্ছিত ঈমাম মাওলানা মাহমুদুল হাসান জানান, মসজিদের পাশের বাসিন্দা আমজাদ মেম্বার পূর্ব ঘটনার জেরে পরিকল্পিতভাবে নাতি লাবিব (১২) কে দিয়ে গত সোমবার বাদ মাগরিব তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন। কারণ হিসেবে তিনি জানান, ২০২৪ সালের রমজানের তারাবির হাদিয়া আদায় নিয়ে মসজিদের সিদ্ধান্তের বাইরে চাঁদা উত্তোলন ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার সাথে আমাজাদ মেম্বারের বিরোধের সৃষ্টি। মসজিদের পাশে বাসা হওয়া সত্বেও বিএনপির ওই নেতা ঘটনার পর থেকে মসজিদে নামাজ আদায় বন্ধ করে দেন। মসজিদ কমিটি সংশ্লিষ্ট সাবেক এক স্কুল শিক্ষক অভিযোগ করেন, ২৪’র ৫ আগস্ট এর পর থেকে প্রায় ১০ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করা এই ইমামকে বাদ দিতে ওই বিএনপি নেতা কমিটির সদস্যদের চাপ দিতে থাকেন। তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় নেতার পরিবারের পক্ষ থেকে মোবাইলে, মোবাইলের ম্যাসেজে ইমামকে অব্যাহতভাবে হুমকি দিতে থাকেন। গত সোমবার(১৩অক্টোবর) মাগরিবের নামাজের পর একইভাবে ম্যাসেজ দিয়ে নাতি লাবিব মসজিদে ঢুকে ইমামকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। আমজাদ এসে নাতিকে নিরাপদে নিয়ে যান। এ ঘটনার পর বিচার অবধি ইমাম নামাজ পড়ানো থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেন। সংশ্লিষ্ট অনেকেই প্রতিশ্রæতি দিয়েও বিচারের ব্যবস্থা করতে পারেননি। ঘটনার তৃতীয় দিনের মাথায় ইমাম মোয়াজ্জেন পরিষদ ধনবাড়ী শাখা প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে। এতে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে একটি টিমও অংশ নেন।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ এম আজিজুর রহমান জানান, নাতির অপরাধে নানার শাস্তি হতে পারে না। তবুও এ ঘটনায় আমজাদকে বার বার ডেকে সাড়া মেলেনি। দলের হাই কমান্ডের নিদের্েেশ অবরোধ কর্মসূচিতে হাজির হয়ে মৌখিকভাবে তাকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
মধুপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম জানান, লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ দিকে কর্মসূচি পালনের পর বুধবার আছরের নামাজ পড়িয়ে ইমাম মাহমুদুল হাসান পুনরায় দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন।