ঢাকা ০৫:৫৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অভিজাত হোটেলে সরবরাহের উদ্দেশ্যে

মধুপুর বনে ঘোড়া জবাই কান্ডে পুলিশী অভিযান, আটক এক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শালবনবার্তা২৪.কম
  • আপডেট সময় : ০৮:২০:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫ ৯৫৮ বার পড়া হয়েছে

রাজধানীর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার অভিজাত হোটেল রেস্তোরায় মাংস সরবরাহের উদ্দেশ্যে একটি চক্রের ঘোড়া জবাই কান্ড পন্ড করে দিয়েছে পুলিশ। টাঙ্গাইলের মধুপুর বনের ভেতর রাতের আঁধারে ঘোড়া জবাই করে মাংস তৈরির এমন কান্ডে পুলিশের অভিযানে হাতেনাতে আটকও হয়েছেন একজন। তার নাম আজাদ মিয়া(৫৫। জামালপুর সদর উপজেলার তুলসীপুরের দড়িপাড়া গ্রামের মৃত জব্বার আলী ওরফে জবরের ছেলে তিনি।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর বনাঞ্চলের মোনারবাইদ (শেওড়াতলা) নামক স্থানের জঙ্গলে দূর্বৃত্তরা ঘোড়ার মাংস বানানোর এ কান্ডটি করছিল। শেষ রাত পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ।
মধুপুর থানার অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বিমল চন্দ্র পাইনের নেতৃত্বে পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে পন্ড করে দিয়েছে দুর্বৃত্তদের আয়োজন। অভিযানে ৭ টি জীবিত ঘোড়া, ৪ টি জবাই করা ঘোড়া, জবাই করার অস্ত্র সরঞ্জামাদি,মাংস সংরক্ষণ উপাদান বরফ, লবণ জব্দসহ এ চক্রের সাথে জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় যুবক শহিদুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, জহিরুল, শাহীন, বাবুল মিয়ারা জানান, রাত প্রায় ১১ টার দিকে এক অটোরিক্সা চালকের মাধ্যমে খবর আসে ঘোড়া ভর্তি দুটি ট্রলি ঘটনা এলাকার বনের ভিতরে নেয়া হচ্ছে। প্রথমে রেকি করে পরে সন্দেহজনক মনে করে তারা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পঁচিশ মাইল বাজার থেকে অভিযান শুরু করা ৭/৮ জনের একটি পুলিশ টিমের সাথে তারাও যুক্ত হন। রাত দুটার দিকে চালানো অভিযানের ওই টিম ঘটনাস্থলে পৌছলে দুর্বৃত্তরা টের পেয়ে সব কিছু ফেলে পালিয়ে যায়।
যুবকরা আরও জানান, গাজীপুর ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের হোটেল মোটেলে বিক্রির জন্য ১১ টি ঘোড়া জঙ্গলে নিয়ে ৪ টা জবাই শেষ করা হয়। বাকি ৭ টা ঘোড়া জবাই করে সব মাংস প্রসেস শেষে সরবরাহ করার প্রস্তুতি চলছিল। আটক আজাদ মিয়া(৫৫) এ মাংস কি করা হবে তা জানেন না জানিয়ে বলেন, এই একবারই তিনি ১ হাজার টাকার কন্ট্রাক্টে ঘোড়ার চামড়া ছাড়ানোর কাজে এসেছিলেন।
মধুপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আরিফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ঘোড়ার এ মাংস হয়ত গরুর মাংসের সাথে মিশিয়ে বিক্রি বা অসৎ উদ্দেশ্যে একক মাংস হিসেবে তাদের কোথাও সরবরাহ করার কথা ছিল। তিনি জানান, নিঃসন্দেহে ঘটনাটি গর্হিত ও অপরাধমূলক। মামলার ক্ষেত্রে পর্যালোচনা করে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার প্রক্রিয়া করা হচ্ছে।
একাধিক ধর্মীয় ব্যক্তি ঘোড়ার মাংস ভক্ষণ ইসলামের বিধানমতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ও হারাম বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ। টাঙ্গাইল জজ কোর্টের আাইনজীবী ইলিয়াস হোসেন মনি জানান, পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১১ অনুযায়ী নিষিদ্ধ পশুর মাংস অগোচরে ভোক্তাকে ভক্ষণ করানোর দায়ে প্রথম দফায় দায়ীকে ১ বছরের কারাদন্ড ও ৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং দ্বিতীয় দফায় একই অপরাধে ২ বছরের কারাদন্ড ও ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ডের বিধান আছে।

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এআর

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :
error: Content is protected !!

অভিজাত হোটেলে সরবরাহের উদ্দেশ্যে

মধুপুর বনে ঘোড়া জবাই কান্ডে পুলিশী অভিযান, আটক এক

আপডেট সময় : ০৮:২০:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

রাজধানীর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার অভিজাত হোটেল রেস্তোরায় মাংস সরবরাহের উদ্দেশ্যে একটি চক্রের ঘোড়া জবাই কান্ড পন্ড করে দিয়েছে পুলিশ। টাঙ্গাইলের মধুপুর বনের ভেতর রাতের আঁধারে ঘোড়া জবাই করে মাংস তৈরির এমন কান্ডে পুলিশের অভিযানে হাতেনাতে আটকও হয়েছেন একজন। তার নাম আজাদ মিয়া(৫৫। জামালপুর সদর উপজেলার তুলসীপুরের দড়িপাড়া গ্রামের মৃত জব্বার আলী ওরফে জবরের ছেলে তিনি।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের মধুপুর বনাঞ্চলের মোনারবাইদ (শেওড়াতলা) নামক স্থানের জঙ্গলে দূর্বৃত্তরা ঘোড়ার মাংস বানানোর এ কান্ডটি করছিল। শেষ রাত পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ।
মধুপুর থানার অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির এসআই বিমল চন্দ্র পাইনের নেতৃত্বে পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে পন্ড করে দিয়েছে দুর্বৃত্তদের আয়োজন। অভিযানে ৭ টি জীবিত ঘোড়া, ৪ টি জবাই করা ঘোড়া, জবাই করার অস্ত্র সরঞ্জামাদি,মাংস সংরক্ষণ উপাদান বরফ, লবণ জব্দসহ এ চক্রের সাথে জড়িত একজনকে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় যুবক শহিদুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, জহিরুল, শাহীন, বাবুল মিয়ারা জানান, রাত প্রায় ১১ টার দিকে এক অটোরিক্সা চালকের মাধ্যমে খবর আসে ঘোড়া ভর্তি দুটি ট্রলি ঘটনা এলাকার বনের ভিতরে নেয়া হচ্ছে। প্রথমে রেকি করে পরে সন্দেহজনক মনে করে তারা পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে পঁচিশ মাইল বাজার থেকে অভিযান শুরু করা ৭/৮ জনের একটি পুলিশ টিমের সাথে তারাও যুক্ত হন। রাত দুটার দিকে চালানো অভিযানের ওই টিম ঘটনাস্থলে পৌছলে দুর্বৃত্তরা টের পেয়ে সব কিছু ফেলে পালিয়ে যায়।
যুবকরা আরও জানান, গাজীপুর ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের হোটেল মোটেলে বিক্রির জন্য ১১ টি ঘোড়া জঙ্গলে নিয়ে ৪ টা জবাই শেষ করা হয়। বাকি ৭ টা ঘোড়া জবাই করে সব মাংস প্রসেস শেষে সরবরাহ করার প্রস্তুতি চলছিল। আটক আজাদ মিয়া(৫৫) এ মাংস কি করা হবে তা জানেন না জানিয়ে বলেন, এই একবারই তিনি ১ হাজার টাকার কন্ট্রাক্টে ঘোড়ার চামড়া ছাড়ানোর কাজে এসেছিলেন।
মধুপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আরিফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ঘোড়ার এ মাংস হয়ত গরুর মাংসের সাথে মিশিয়ে বিক্রি বা অসৎ উদ্দেশ্যে একক মাংস হিসেবে তাদের কোথাও সরবরাহ করার কথা ছিল। তিনি জানান, নিঃসন্দেহে ঘটনাটি গর্হিত ও অপরাধমূলক। মামলার ক্ষেত্রে পর্যালোচনা করে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার প্রক্রিয়া করা হচ্ছে।
একাধিক ধর্মীয় ব্যক্তি ঘোড়ার মাংস ভক্ষণ ইসলামের বিধানমতে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ও হারাম বলে জানিয়েছেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ। টাঙ্গাইল জজ কোর্টের আাইনজীবী ইলিয়াস হোসেন মনি জানান, পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১১ অনুযায়ী নিষিদ্ধ পশুর মাংস অগোচরে ভোক্তাকে ভক্ষণ করানোর দায়ে প্রথম দফায় দায়ীকে ১ বছরের কারাদন্ড ও ৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং দ্বিতীয় দফায় একই অপরাধে ২ বছরের কারাদন্ড ও ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ডের বিধান আছে।

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এআর