টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর–ধনবাড়ী) আসন
মধুপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ–ধাওয়া–ককটেল বিস্ফোরণ
- আপডেট সময় : ১০:২৫:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫ ৮১ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের মধুপুরে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ, ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বুধবার বিকেলে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডের সড়ক মোহনার আনারস চত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
মনোনয়ন বঞ্চিত কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলীর সমর্থকরা বিকেল সাড়ে চারটার দিকে স্বপন ফকিরের মনোনয়ন বাতিল দাবিতে পূর্ব নির্ধারিত বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মধুপুর বাসস্ট্যান্ডের দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় আগেই সেখানে অবস্থান করা মনোনয়নপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা ফকির মাহবুব আনাম স্বপন সমর্থিত গ্রুপ বাধা দিলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় পথচারী আনোয়ার হোসেন জানান, বাসস্ট্যান্ডের কাছাকাছি পৌঁছালে মোহাম্মদ আলীর সমর্থিত মিছিলে ককটেল নিক্ষেপ হয়। এতে পরিস্থিতি ব্যাপক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মোহাম্মদ আলীর সমর্থকরা প্রতিপক্ষকে ধাওয়া দিলে কয়েক দফা ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া হয়। এক পর্যায়ে পুরো বাসস্ট্যান্ড এলাকা মোহাম্মদ আলী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। তারা স্লোগান দিতে থাকে— “বয়কট, বয়কট—স্বপন ফকির বয়কট।” প্রায় দেড় ঘন্টা এ ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান চলে।
বাসস্ট্যান্ডের সড়ক মোহনার তিন রোডে কয়েক কি.মি.পর্যন্ত যানজট বাধে।
সংঘর্ষের সময় মধুপুর বাসস্ট্যান্ডের একটি ও জামালপুর রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানো হয়। দুই পক্ষই আহতের দাবি করলেও, স্বপন ফকির গ্রুপের আরিফ নামে একজনের আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ প্রথমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলেও পরে নিয়ন্ত্রণ আনেন।
ঘটনাস্থলে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মির্জা জুবায়ের হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নঈম উদ্দিন, সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম, মধুপুর থানার ওসি এমরানুল কবির, তদন্ত কর্মকর্তা রাসেল আহমেদ ও সেনা সদস্যরা উপস্থিত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা সমন্বিতভাবে কাজ করেন।
এদিকে মোহাম্মদ আলী গ্রুপের সমর্থকরা সন্ধ্যার পরে মোহাম্মদ আলীর কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশ করে। সমাবেশে মোহাম্মদ আলী গ্রুপের সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন, জয়নাল আবেদিন খান বাবলু প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
এ ঘটনায় মধুপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন— মোহাম্মদ আলীর সমর্থকরা তাদের সমাবেশে তারেক রহমানকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তৃতা করেন। এ সময় স্বপন ফকিরের কর্মী-সমর্থকরা প্রতিবাদ জানায়। একপর্যায়ে মোহাম্মদের লোকজন তাদের উপর হামলা চালায় এবং বাসস্ট্যান্ডের বিভিন্ন স্থানে অবরুদ্ধ করে রাখেন। হামলার ঘটনায় তাদের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলও জানান।
বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত মোহাম্মদ আলীর গ্রুপের প্রধান সমম্বয়ক আনোয়ার হোসেন বলেন— গত এক সপ্তাহ আগে তাদের পূর্বঘোষিত প্রোগ্রাম ছিল আজ বুধবার । স্বপন ফকিরের সমর্থকরা তাদের প্রোগ্রাম প্রতিহত করার জন্য শহরের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেন। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে তাদের লোকজন বিক্ষোভ নিয়ে আনারস চত্বরে গেলে বাঁধা প্রদান করে এবং হামলাসহ ভাঙচুর করে।
এ বিষয়ে মধুপুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমরানুল কবির গণমাধ্যম কে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’পক্ষের লোকজনকে সরিয়ে দেয়া হয় এবং পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ৭ টা পর্যন্ত) মধুপুর পৌর শহর জুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকে মোহাম্মদ আলী গ্রুপের সমর্থকগণ স্বপন ফকিরের মনোনয়ন বাতিল করে মোহাম্মদ আলী কে মনোনয়ন দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে।


















