ঢাকা ০৪:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বনবিভাগের উচ্ছেদ অভিযান

মধুপুরে নওমুসলিম নারীর বাড়ি ভেঙ্গে ফেলায় সড়ক অবরোধ ॥ বিক্ষোভ সমাবেশ

মধুপুর করেসপন্ডেন্ট শালবনবার্তা২৪.কম
  • আপডেট সময় : ১১:৪১:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫ ১২১ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের মধুপুরে বনবিভাগের লোকজন নওমুসলিম এক নারীর গণসহযোগিতায় নির্মাণাধীন বাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়ক পঁচিশ মাইল এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত ৮ টা অবধি এই কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচি চলাকালে ওই সড়কের উপরই বিক্ষোবকারীরা মাগরিবের নামাজ আদায় করেন।

জানা যায়, উপজেলার বনাঞ্চলের গাছাবাড়ি এলাকার এক খৃষ্টধর্মীয় গারো নারী বেশ কিছুদিন আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। সুমাইয়া নামধারী ওই নারী পঁচিশমাইল এলাকায় ফারুক হোসেন নামে জনৈক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রিত। ওই নারীর পাশে দাঁড়ান এলাকাবাসী। যাকাত,ফিতরা ও অনুদানের অর্থ দিয়ে পঁচিশমাইল বাসস্ট্যন্ডের কাছে বসতিপূর্ণ এলাকায় তিন শতাংশ জমির দখলস্বত্ব কিনে দিয়ে ঘর নির্মাণ করে দেয়ার প্রকল্প নেন। ঘরটির নির্মাণ কাজ চলমান। বুধবার সকালে বন বিভাগ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে ওই নওমুসলিম নারীর ঘরটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে।


সুমাইয়া জানান, ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হিসেবে তিনি অসহায়। স্থানীয়দের অর্থে মাথা গোজাঁর একটা ঠাঁই তৈরির কাজ শেষ হওয়ার আগেই বনবিভাগের লোকজন ভেঙ্গে দিলো।
তিনি অভিযোগ করেন, কোন প্রকার নোটিশ দেওয়া হয়নি। অবহিত না করে হঠাৎ করেই বুধবার সকালে আমার ঘর ভেঙ্গে দেয় বনবিভাগ।
গাছাবাড়ী বিটের বন কর্মকর্তা আব্দুল কদ্দুছ বলেন, রেঞ্জ অফিস থেকে নির্দেশিত হয়ে এমন উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে।
টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও)ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন, সহকারী বন সংরক্ষক(উত্তর) আশিকুর রহমান, রোকসানা জাহান এই তিনজন কে পর পর মোবাইলে কল করলে কেউ রিসিভ করেননি।

এদিকে বনবিভাগের এ হেন আচরণে স্থানীয়রা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা আছরের নামাজের পর থেকেই জলছত্র থেকে পচিশমাইল এলাকা পর্যন্ত বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। মাগরিবের আগে পঁচিশমাইল এলাকায় সমাবেশ শেষে বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএডিসি জামে মসজিদের ইমাম ইব্রাহীম তকী, মুফতি আরিফ আদনান, পচিশমাইল জামে মসজিদের খতিব আব্দুল বাছেদ, মুফতি মাসুম বিল্লাহ, ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ, আব্দুস সামাদ খান, আবু হানিফ প্রমূখ।


সমাবেশ এক পর্যায়ে সড়কেই তারা মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। এই অবরোধের ফলে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ সড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের উভয় প্রান্তে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে জনদুর্ভোগ চরমে উঠে। ওই নারীর থাকার ব্যবস্থা করার আশ্বাসে রাত ৮ টার দিকে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেয়। এ নিয়ে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মীমাংসা বৈঠক বসে স্থানীয ট্রাক ও কভার্ডভ্যান চালক ইউনিয়ন কার্যালয়ে ।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান বিক্ষোভকারীরা আশ্বাসে আপাতত শান্ত হয়েছেন।

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এআর

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

বনবিভাগের উচ্ছেদ অভিযান

মধুপুরে নওমুসলিম নারীর বাড়ি ভেঙ্গে ফেলায় সড়ক অবরোধ ॥ বিক্ষোভ সমাবেশ

আপডেট সময় : ১১:৪১:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

টাঙ্গাইলের মধুপুরে বনবিভাগের লোকজন নওমুসলিম এক নারীর গণসহযোগিতায় নির্মাণাধীন বাড়ি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়ার প্রতিবাদে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়ক পঁচিশ মাইল এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে স্থানীয় বাসিন্দারা। বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত ৮ টা অবধি এই কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচি চলাকালে ওই সড়কের উপরই বিক্ষোবকারীরা মাগরিবের নামাজ আদায় করেন।

জানা যায়, উপজেলার বনাঞ্চলের গাছাবাড়ি এলাকার এক খৃষ্টধর্মীয় গারো নারী বেশ কিছুদিন আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। সুমাইয়া নামধারী ওই নারী পঁচিশমাইল এলাকায় ফারুক হোসেন নামে জনৈক ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রিত। ওই নারীর পাশে দাঁড়ান এলাকাবাসী। যাকাত,ফিতরা ও অনুদানের অর্থ দিয়ে পঁচিশমাইল বাসস্ট্যন্ডের কাছে বসতিপূর্ণ এলাকায় তিন শতাংশ জমির দখলস্বত্ব কিনে দিয়ে ঘর নির্মাণ করে দেয়ার প্রকল্প নেন। ঘরটির নির্মাণ কাজ চলমান। বুধবার সকালে বন বিভাগ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে ওই নওমুসলিম নারীর ঘরটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে।


সুমাইয়া জানান, ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলমান হিসেবে তিনি অসহায়। স্থানীয়দের অর্থে মাথা গোজাঁর একটা ঠাঁই তৈরির কাজ শেষ হওয়ার আগেই বনবিভাগের লোকজন ভেঙ্গে দিলো।
তিনি অভিযোগ করেন, কোন প্রকার নোটিশ দেওয়া হয়নি। অবহিত না করে হঠাৎ করেই বুধবার সকালে আমার ঘর ভেঙ্গে দেয় বনবিভাগ।
গাছাবাড়ী বিটের বন কর্মকর্তা আব্দুল কদ্দুছ বলেন, রেঞ্জ অফিস থেকে নির্দেশিত হয়ে এমন উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে।
টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও)ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন, সহকারী বন সংরক্ষক(উত্তর) আশিকুর রহমান, রোকসানা জাহান এই তিনজন কে পর পর মোবাইলে কল করলে কেউ রিসিভ করেননি।

এদিকে বনবিভাগের এ হেন আচরণে স্থানীয়রা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তারা আছরের নামাজের পর থেকেই জলছত্র থেকে পচিশমাইল এলাকা পর্যন্ত বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। মাগরিবের আগে পঁচিশমাইল এলাকায় সমাবেশ শেষে বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। সমাবেশে বক্তব্য দেন বিএডিসি জামে মসজিদের ইমাম ইব্রাহীম তকী, মুফতি আরিফ আদনান, পচিশমাইল জামে মসজিদের খতিব আব্দুল বাছেদ, মুফতি মাসুম বিল্লাহ, ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ, আব্দুস সামাদ খান, আবু হানিফ প্রমূখ।


সমাবেশ এক পর্যায়ে সড়কেই তারা মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। এই অবরোধের ফলে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ সড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সড়কের উভয় প্রান্তে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে জনদুর্ভোগ চরমে উঠে। ওই নারীর থাকার ব্যবস্থা করার আশ্বাসে রাত ৮ টার দিকে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেয়। এ নিয়ে রাত সাড়ে ৮ টার দিকে মীমাংসা বৈঠক বসে স্থানীয ট্রাক ও কভার্ডভ্যান চালক ইউনিয়ন কার্যালয়ে ।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান বিক্ষোভকারীরা আশ্বাসে আপাতত শান্ত হয়েছেন।

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এআর