ঢাকা ০১:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৩০ পৌরসভা প্রকল্পের মধুপুর পৌরসভা

ওয়াটার সাপ্লাই কাজে ২কোটি টাকার উন্নয়ন ভেস্তে,পুনরায় শুরু হলেও শঙ্কা থাকছেই

স্পেশাল করেসপন্ডন্ট, শালবনবার্তা২৪.কম
  • আপডেট সময় : ০৫:১০:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫ ৩০৭ বার পড়া হয়েছে

দেশের ৩০পৌরসভার ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌরসভার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের কাজ সড়ক ও জনপদের ড্রেন নির্মাণে বাধাগ্রস্ত হয়ে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নাগরিক সেবায় শহরের প্রতিটি হোল্ডিংএ মাটির নিচ দিয়ে পানি সাপ্লাইয়ের লক্ষ্যে বসানো ২.১ কি.মি. পাইপসহ যাবতীয় কাজ ধ্বংস হয়ে এ ক্ষতি হয়েছে। সওজে’র নির্মিত ড্রেনের সমান্তরালে আবার সে কাজ শুরু করেছে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। কিন্তু আগে বসানো দেড় কি.মি পাইপ কাটা পড়ার নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে এমন তথ্য।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৩০ পৌসভার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলের মধুপুর,ধনবাড়ী ও ভুঞাপুর পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ২০২০ সালের দিকে বাল্ক প্যাকেজে ৩৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। এ বাজেট থেকে প্রাপ্ত প্রায় ১৪ কোটি টাকায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারস লিমিটেড প্রকল্পের পাম্প হাউজ ওয়াটার ট্রিটম্যান প্লানের কাজ করে। একই প্রকল্পে জে.কে এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পৌর কর্তৃপক্ষের আলাদা বরাদ্দে ৮ কোটি টাকার পাইপ লাইন নেট ওয়ার্কি কাজ করছে। অর্থাৎ মধুপুর পৌর এলাকার ৬৫ কি.মি দৈর্ঘের পাইপ লাইনে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নির্মাণ ব্যয় হচ্ছে ২২ কোটি টাকার উপরে। কার্জাদেশ পেয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ম্যানুয়ালি ও স্বংক্রিয় মেশিনে পাইপ লাইন স্থাপন করে। প্রাথমিকভাবে সাড়ে ৩ হাজার পৌর নাগরিকের আবেদনের বিপরীতে নির্ধারিত ৩ হাজার গ্রাহককে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে এ কাজ হয়। প্রকল্প ডিজাইনে ওয়াটার ট্রিটম্যান প্লান(পানি শোধনাগার), ৫টি পানি সংরক্ষণ(আধার) নির্মাণ ও গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি পানি সংযোগ যন্ত্র বসে। প্রকল্প সূত্র জানায়, ২৫ শ গ্রাহককে উন্নয়ন সহায়ক প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংক ৬ মাস এই পনি সরবরাহ কাজে তদারকি করবে।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, টেকি এলাকায় ওয়াটার ট্রিটম্যান প্লান ও ৫ টি পাম্প হাউজ (টেকি,চাড়ালজানী,জটাবাড়ী, টেংরি ও টেপাখালী) থেকে এই গ্রাহকদের পানি সরবরাহের প্রক্রিয়ায় জায়গা জটিলতায় শুধু টেপাখালী পাম্প হাউজ নির্মাণ ঝুলে যায়। তারপরও বাছাই করা গ্রাহকদের বাসার সামনে পানি সংযোগের কল বসে। টেপাখালী পাম্প হাউজ ছাড়াই প্রকল্প শেষ পর্যায়ে আসে। প্রকল্প থেকে বলা হয়, ২০২৪ সালে প্রায় ৯৫% কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর মধুপুর পৌর শহরের টাঙ্গাইল- ময়মনসিংহ সড়কের উন্নয়সহ দুই পাশ দিয়ে ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপদ। এতে ইতোপুর্বে প্রকল্পের ম্যানুয়ালি ও মেশিনে মাটির নিচ দিয়ে বসানো প্রায় ৩.৪ কি.মি. দৈর্ঘ্যরে পানি সরবরাহ পাইপের ২.১ কি.মি কাটা পড়ে ধ্বংস হয়ে যায়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী ইমরান হোসেন এতে প্রকল্পের প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতির কথা স্বীকার করেন। এদিকে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অলস সময় কাটাতে থাকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। সড়ক ও জনপদের ড্রেন নির্মাণকালীন দীর্ঘ দিন পানির পাইপ লাইনের কাজ বন্ধ থাকে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বাধা ও মামলায় মধুপুর হাটখোলা থেকে বাসস্ট্যান্ডের আনারস চত্ত্বর পর্যন্ত দুই পাশের প্রায় দেড় কি.মি. বাদ রেখে সওজ আংশিক ড্রেন নির্মাণ কাজ শেষ করে। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট অফিসের সাথে সমঝোতায় রিভাইস শর্তে ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্প ঠিকাদার কাজটি নির্ধারিত বাজেটের মধ্যেই সম্পন্ন করতে উদ্যোগ নেয়। নির্মিত ড্রেনের দুই পাশ দিয়ে পাইপ বসানোর কাজ দ্রুত শেষ করতে মাঠে নামে। প্রায় শেষ দিকে এসে নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। মধুপুর হাটখোলা থেকে বাসস্ট্যান্ডের আনারস চত্ত্বর পর্যন্ত বছরাধিকাল আগে স্বংক্রিয় মেশিনে বসানো পাইপে সংযোগ দিলেই ৬৫ কি. মি পাইপে পানি সরবরাহ শুরু করা যেত। কিন্তু সড়ক ও জনপদের বাকি অংশে ড্রেন তৈরি শুরু করলে সেখানে পাইপ কাটা পড়ার শঙ্কা আছে। কাটা পড়লে পানি সরবরাহ কাজ আবারও অনিশ্চতায় পড়বে। সড়ক ও জনপদের মধুপুরের দায়িত্বে থাকা উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সোহেল মাহমুদ জানান, মধুপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ময়মনসিংহ সড়কের দুই পাশ দিয়ে ১৪২ কোটি টাকায় ৩ কি.মি সড়ক, ড্রেন,টাইলসে ফুটপাত তৈরির প্যাকেজ প্রকল্পে অনেক চরাই উৎরাইয়ে কাজ শেষ পর্যায়ে এসে স্থানীয়দের মামলায় ৭০০ মিটারে কাজ ঝুলে আছে। কবে শেষ হবে তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।

এদিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী আল আমিন হোসেন জানান, পানি সরবরাহ প্রকল্পের টেপাখালীর পাম্প হাউজ নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৩৫/৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের সহকারী পরিচালক(ডিপিও) মাহমুদুর রশীদ মজুমদার জানান,২০২৪ সালে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল। এক্সটেনশন সময়ে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে।

 

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এআর

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

error: Content is protected !!

৩০ পৌরসভা প্রকল্পের মধুপুর পৌরসভা

ওয়াটার সাপ্লাই কাজে ২কোটি টাকার উন্নয়ন ভেস্তে,পুনরায় শুরু হলেও শঙ্কা থাকছেই

আপডেট সময় : ০৫:১০:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫

দেশের ৩০পৌরসভার ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌরসভার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের কাজ সড়ক ও জনপদের ড্রেন নির্মাণে বাধাগ্রস্ত হয়ে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নাগরিক সেবায় শহরের প্রতিটি হোল্ডিংএ মাটির নিচ দিয়ে পানি সাপ্লাইয়ের লক্ষ্যে বসানো ২.১ কি.মি. পাইপসহ যাবতীয় কাজ ধ্বংস হয়ে এ ক্ষতি হয়েছে। সওজে’র নির্মিত ড্রেনের সমান্তরালে আবার সে কাজ শুরু করেছে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। কিন্তু আগে বসানো দেড় কি.মি পাইপ কাটা পড়ার নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে এমন তথ্য।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ৩০ পৌসভার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় টাঙ্গাইলের মধুপুর,ধনবাড়ী ও ভুঞাপুর পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ২০২০ সালের দিকে বাল্ক প্যাকেজে ৩৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। এ বাজেট থেকে প্রাপ্ত প্রায় ১৪ কোটি টাকায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারস লিমিটেড প্রকল্পের পাম্প হাউজ ওয়াটার ট্রিটম্যান প্লানের কাজ করে। একই প্রকল্পে জে.কে এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান পৌর কর্তৃপক্ষের আলাদা বরাদ্দে ৮ কোটি টাকার পাইপ লাইন নেট ওয়ার্কি কাজ করছে। অর্থাৎ মধুপুর পৌর এলাকার ৬৫ কি.মি দৈর্ঘের পাইপ লাইনে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নির্মাণ ব্যয় হচ্ছে ২২ কোটি টাকার উপরে। কার্জাদেশ পেয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ম্যানুয়ালি ও স্বংক্রিয় মেশিনে পাইপ লাইন স্থাপন করে। প্রাথমিকভাবে সাড়ে ৩ হাজার পৌর নাগরিকের আবেদনের বিপরীতে নির্ধারিত ৩ হাজার গ্রাহককে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে এ কাজ হয়। প্রকল্প ডিজাইনে ওয়াটার ট্রিটম্যান প্লান(পানি শোধনাগার), ৫টি পানি সংরক্ষণ(আধার) নির্মাণ ও গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি পানি সংযোগ যন্ত্র বসে। প্রকল্প সূত্র জানায়, ২৫ শ গ্রাহককে উন্নয়ন সহায়ক প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাংক ৬ মাস এই পনি সরবরাহ কাজে তদারকি করবে।

ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, টেকি এলাকায় ওয়াটার ট্রিটম্যান প্লান ও ৫ টি পাম্প হাউজ (টেকি,চাড়ালজানী,জটাবাড়ী, টেংরি ও টেপাখালী) থেকে এই গ্রাহকদের পানি সরবরাহের প্রক্রিয়ায় জায়গা জটিলতায় শুধু টেপাখালী পাম্প হাউজ নির্মাণ ঝুলে যায়। তারপরও বাছাই করা গ্রাহকদের বাসার সামনে পানি সংযোগের কল বসে। টেপাখালী পাম্প হাউজ ছাড়াই প্রকল্প শেষ পর্যায়ে আসে। প্রকল্প থেকে বলা হয়, ২০২৪ সালে প্রায় ৯৫% কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর মধুপুর পৌর শহরের টাঙ্গাইল- ময়মনসিংহ সড়কের উন্নয়সহ দুই পাশ দিয়ে ড্রেন নির্মাণের কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপদ। এতে ইতোপুর্বে প্রকল্পের ম্যানুয়ালি ও মেশিনে মাটির নিচ দিয়ে বসানো প্রায় ৩.৪ কি.মি. দৈর্ঘ্যরে পানি সরবরাহ পাইপের ২.১ কি.মি কাটা পড়ে ধ্বংস হয়ে যায়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী ইমরান হোসেন এতে প্রকল্পের প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষতির কথা স্বীকার করেন। এদিকে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অলস সময় কাটাতে থাকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। সড়ক ও জনপদের ড্রেন নির্মাণকালীন দীর্ঘ দিন পানির পাইপ লাইনের কাজ বন্ধ থাকে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বাধা ও মামলায় মধুপুর হাটখোলা থেকে বাসস্ট্যান্ডের আনারস চত্ত্বর পর্যন্ত দুই পাশের প্রায় দেড় কি.মি. বাদ রেখে সওজ আংশিক ড্রেন নির্মাণ কাজ শেষ করে। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট অফিসের সাথে সমঝোতায় রিভাইস শর্তে ওয়াটার সাপ্লাই প্রকল্প ঠিকাদার কাজটি নির্ধারিত বাজেটের মধ্যেই সম্পন্ন করতে উদ্যোগ নেয়। নির্মিত ড্রেনের দুই পাশ দিয়ে পাইপ বসানোর কাজ দ্রুত শেষ করতে মাঠে নামে। প্রায় শেষ দিকে এসে নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। মধুপুর হাটখোলা থেকে বাসস্ট্যান্ডের আনারস চত্ত্বর পর্যন্ত বছরাধিকাল আগে স্বংক্রিয় মেশিনে বসানো পাইপে সংযোগ দিলেই ৬৫ কি. মি পাইপে পানি সরবরাহ শুরু করা যেত। কিন্তু সড়ক ও জনপদের বাকি অংশে ড্রেন তৈরি শুরু করলে সেখানে পাইপ কাটা পড়ার শঙ্কা আছে। কাটা পড়লে পানি সরবরাহ কাজ আবারও অনিশ্চতায় পড়বে। সড়ক ও জনপদের মধুপুরের দায়িত্বে থাকা উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সোহেল মাহমুদ জানান, মধুপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ময়মনসিংহ সড়কের দুই পাশ দিয়ে ১৪২ কোটি টাকায় ৩ কি.মি সড়ক, ড্রেন,টাইলসে ফুটপাত তৈরির প্যাকেজ প্রকল্পে অনেক চরাই উৎরাইয়ে কাজ শেষ পর্যায়ে এসে স্থানীয়দের মামলায় ৭০০ মিটারে কাজ ঝুলে আছে। কবে শেষ হবে তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি।

এদিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী আল আমিন হোসেন জানান, পানি সরবরাহ প্রকল্পের টেপাখালীর পাম্প হাউজ নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ৩৫/৪০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের সহকারী পরিচালক(ডিপিও) মাহমুদুর রশীদ মজুমদার জানান,২০২৪ সালে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা ছিল। এক্সটেনশন সময়ে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে।

 

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এআর