ঢাকা ১১:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মধুপুরের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক

বীর মুক্তিযোদ্ধা মনছুর আলীর প্রয়াণ, গার্ড অব অনার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শালবনবার্তা২৪.কম
  • আপডেট সময় : ১১:২৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ৪৯০ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা মনছুর আলী প্রয়াত হয়েছেন। বার্ধক্য জনিত রোগাক্রান্ত হয়ে তিনি বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল)বিকেল ৩টার দিকে পৌর এলাকার মালাউড়ী গ্রামের নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেছেন।(ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)

ওই গ্রামের মরহুম পিয়ার আলীর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মনছুর আলী পাকিস্তানের মিলিটারিতে চাকরি করতেন। একাত্তরের মার্চে তিনি ছুটির কারণে বাড়িতে ছিলেন। মার্চের প্রথম দিকেই তিনি বুঝতে পেরে ছিলেন যুদ্ধ আসন্ন। তাই স্থানীয় তরুণ, যুবকদের একত্র করে তিনি যুদ্ধের কৌশল শেখানো শুরু করেন। নিরাপদ নির্জন বেশ কয়েক জায়গায় তিনি এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন। মধুপুর মুক্তিযোদ্ধাগণ তার কাছে প্রথম যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে সরাসরি যুদ্ধ করেছেন বেশ কিছু বীর মুক্তিযোদ্ধা । তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ হয়েছিল এই মধুপুরের মালাউড়ী মসজিদ এলাকায়। সেই প্রতিরোধ যুদ্ধে পাকিস্তান বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। এছাড়াও তিনি বেশ কয়েকটি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের এই বীর সেনানীর মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে মধুপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে। শোক জানিয়েছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তারা শোক সন্তপ্ত পরিবােরর প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন,অসীম সাহসিকতার সাথে তিনি যুদ্ধ করেছেন। দেশের জন্য তাঁর অবদান অকৃত্রিম। জাতি তাঁর অকৃত্রিম অবদানের কথা স্মরণ রাখবে।প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মনছুর আলীর বিদেহী আত্নার শান্তি কামনা করছেন তারা।

প্রয়াত এই বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাজা নামাজ বৃহস্পতিবার রাত ১০ টায় মালাউড়ী গোরস্থান মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সন্ধ্যায় বাড়ির আঙ্গিনায় প্রয়াত এই বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়। টাঙ্গাইল থেকে আসা পুলিশের একটি চৌকস দল এই বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এ সময় মধুপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মির্জা জুবায়ের হোসেন, মধুপুর থানার ওসি (তদন্ত) রাসেল আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণসহ সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনগণ উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার মেয়েসহ আত্নীয় স্বজন রেখে গেছেন। তাঁর একমাত্র ছেলে বেশ কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার বয়স হয়েছিল প্রায় ৮৭ বছর।

উল্লেখ্য,জমি সংক্রান্ত প্রতিপক্ষের করা একটি মামলায় প্রয়াত বীর মুক্তিযুদ্ধার স্ত্রী ও এক মেয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হাজতে আটকে আছেন। তাদেরকে জানানো হয়নি তাঁর এই মৃত্যুর খবর।

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এআর

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

error: Content is protected !!

মধুপুরের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক

বীর মুক্তিযোদ্ধা মনছুর আলীর প্রয়াণ, গার্ড অব অনার

আপডেট সময় : ১১:২৬:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষক বীর মুক্তিযোদ্ধা মনছুর আলী প্রয়াত হয়েছেন। বার্ধক্য জনিত রোগাক্রান্ত হয়ে তিনি বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল)বিকেল ৩টার দিকে পৌর এলাকার মালাউড়ী গ্রামের নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেছেন।(ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)

ওই গ্রামের মরহুম পিয়ার আলীর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মনছুর আলী পাকিস্তানের মিলিটারিতে চাকরি করতেন। একাত্তরের মার্চে তিনি ছুটির কারণে বাড়িতে ছিলেন। মার্চের প্রথম দিকেই তিনি বুঝতে পেরে ছিলেন যুদ্ধ আসন্ন। তাই স্থানীয় তরুণ, যুবকদের একত্র করে তিনি যুদ্ধের কৌশল শেখানো শুরু করেন। নিরাপদ নির্জন বেশ কয়েক জায়গায় তিনি এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন। মধুপুর মুক্তিযোদ্ধাগণ তার কাছে প্রথম যুদ্ধের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে সরাসরি যুদ্ধ করেছেন বেশ কিছু বীর মুক্তিযোদ্ধা । তাঁর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৪ এপ্রিল প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ হয়েছিল এই মধুপুরের মালাউড়ী মসজিদ এলাকায়। সেই প্রতিরোধ যুদ্ধে পাকিস্তান বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়। এছাড়াও তিনি বেশ কয়েকটি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন।

মহান মুক্তিযুদ্ধের এই বীর সেনানীর মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তাঁর মৃত্যুতে মধুপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে। শোক জানিয়েছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তারা শোক সন্তপ্ত পরিবােরর প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন,অসীম সাহসিকতার সাথে তিনি যুদ্ধ করেছেন। দেশের জন্য তাঁর অবদান অকৃত্রিম। জাতি তাঁর অকৃত্রিম অবদানের কথা স্মরণ রাখবে।প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মনছুর আলীর বিদেহী আত্নার শান্তি কামনা করছেন তারা।

প্রয়াত এই বীর মুক্তিযোদ্ধার জানাজা নামাজ বৃহস্পতিবার রাত ১০ টায় মালাউড়ী গোরস্থান মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সন্ধ্যায় বাড়ির আঙ্গিনায় প্রয়াত এই বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়। টাঙ্গাইল থেকে আসা পুলিশের একটি চৌকস দল এই বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এ সময় মধুপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মির্জা জুবায়ের হোসেন, মধুপুর থানার ওসি (তদন্ত) রাসেল আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বীর মুক্তিযোদ্ধাগণসহ সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনগণ উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার মেয়েসহ আত্নীয় স্বজন রেখে গেছেন। তাঁর একমাত্র ছেলে বেশ কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে এই বীর মুক্তিযোদ্ধার বয়স হয়েছিল প্রায় ৮৭ বছর।

উল্লেখ্য,জমি সংক্রান্ত প্রতিপক্ষের করা একটি মামলায় প্রয়াত বীর মুক্তিযুদ্ধার স্ত্রী ও এক মেয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হাজতে আটকে আছেন। তাদেরকে জানানো হয়নি তাঁর এই মৃত্যুর খবর।

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এআর