ঢাকা ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৪ বছরের অপেক্ষার পালা শেষ

মধুপুরের নিত্যানন্দ সেবাশ্রমের নতুন মন্দির উদ্বোধন

মধুপুর করেসপন্ডেন্ট শালবনবার্তা২৪.কম
  • আপডেট সময় : ০৫:২৪:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫ ২১০ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্রে সনাতনীদের শ্রী শ্রী নিত্যানন্দ সেবা ও অনাথ আশ্রমের নতুন মন্দির উদ্বোধন হয়ে গেল। মঙ্গল ও বুধবার দুইদিন ব্যাপি ছিল উদ্বোধনী কর্মসূচি। মঙ্গলবার ভোরে প্রার্থনা, কীর্তন, সন্ধ্যায় মঙ্গল শোভাযাত্রা ও রাতে আলোচনাসভা হয়েছে। বুধবার দিনব্যাপি ছিল যজ্ঞ,পুজা,প্রার্থনা,প্রসাদ ও পাঁচ সহ¯্রাধিক ভক্তের মাঝে ভোগ বিতরণ। গত চার বছর ধরে মন্দিরটির পুনঃনির্মাণের কাজ চলেছে। দুই কোটি টাকার উপরে ব্যয় দেশের অন্যতম এ মন্দির উদ্বোধন ছিল দেশের নানা প্রান্তের সনতানীদের মিলন মেলা।

আশ্রম পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা ও সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব সিংহ টনি জানান,আশ্রমটি ১১৮ বছর আগে ১৩১৪ বঙ্গাব্দে পাগল গোপাল গোস্বামী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। তারও বেশ কয়েক বছর আগে নিত্যলিলা প্রবিষ্ট পাগলা গোপাল গোস্বামী এই মন্দিরের তৎকালীন জঙ্গলময় স্থানে আশ্রয় নেন। তাঁকে সম্মান জানিয়ে এ অঞ্চলের তৎকালীন রাণী হেমন্ত কুমারীর পক্ষ থেকে ২.৪ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু পাগল গোস্বামী নিজের নামে না নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের নামে বরাদ্দ গ্রহণ করেন। তখন থেকে আশ্রমটির যাত্রা। পরে কয়েক সদস্যের পরিচালনায় আশ্রমের কার্যক্রম চলে। ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিবন্ধন হয়। তারা আরও জানান,গোপাল গোস্বামী এই আশ্রম থেকে তীর্থে গিয়ে ভারতের নদীয়ায় দেহ ত্যাগ করেন। আশ্রমের উদ্যোগে সেখান থেকে মাটি এনে তাঁর নামে স্মৃতি মন্দির করা হয়েছে আশ্রমটিতে। তাঁর প্রয়াণ দিনকে স্মরণ করে আশ্রমের আয়োজনে এবার ৯৮ তম নাম ও লীলা কীর্তন উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
কর্মসূচিতে উপস্থিত নিশিকান্ত রায়, অধ্যাপক ¯েœহময় গুহনিয়োগী, সুশীল চন্দ্র দাস, ডা. জহর লাল চৌধুরী,অলক কুমার চৌধুরী, লিটন সিংহসহ অনেকে জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি সনাতনী আশ্রয়হীনদের আশ্রয় আর অনাথদের নিরাপদ ঠিকানা। এ পথে চলতে অনেক সনাতনী এই মন্দিরে এসে দ্বিধাহীন সেবা গ্রহণ করেন। প্রতিদিন সেবা গ্রহিতাদের সেবায় প্রস্তুত থাকে প্রসাদ। আশ্রমে সর্বদা সেবাদান কাজে অন্তত ১০জন নিয়োজিত থাকেন। স্থানীয় ভক্তগণ প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা দুইবার প্রার্থনা করতে ছুটে আসেন এ আশ্রমের মন্দিরে। প্রার্থণা করে দিন শুরু করেন অসংখ্য সনাতনী। এ অঞ্চলের সনাতনীদের কাছে আশ্রমটির গুরুত্ব অনেক। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে টিনশেড থেকে পাকা রূপে দুইবার উন্নয়ন হলেও দৃশ্যমান বড় উন্নয়ন আগে হয়নি। এইবার চার বছর ধরে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের অন্যতম সৌন্দর্যের মন্দির নির্মাণ হলো। ভক্তদের দান সহযোগিতায় মন্দিরটি সৌন্দর্যে এবার অনন্য হয়ে উঠলো। সারাদেশ থেকে ভক্তদের আগমনে মন্দিরের উদ্বোধনী মূহূর্ত পরিণত হয়েছিল সনাতনীদের মিলন মেলা। দেশের অন্যতম এ মন্দির রাতের রঙিন বাতির আলোর সৌন্দর্য চোখ ধাঁধিয়ে যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!

৪ বছরের অপেক্ষার পালা শেষ

মধুপুরের নিত্যানন্দ সেবাশ্রমের নতুন মন্দির উদ্বোধন

আপডেট সময় : ০৫:২৪:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌর শহরের প্রাণ কেন্দ্রে সনাতনীদের শ্রী শ্রী নিত্যানন্দ সেবা ও অনাথ আশ্রমের নতুন মন্দির উদ্বোধন হয়ে গেল। মঙ্গল ও বুধবার দুইদিন ব্যাপি ছিল উদ্বোধনী কর্মসূচি। মঙ্গলবার ভোরে প্রার্থনা, কীর্তন, সন্ধ্যায় মঙ্গল শোভাযাত্রা ও রাতে আলোচনাসভা হয়েছে। বুধবার দিনব্যাপি ছিল যজ্ঞ,পুজা,প্রার্থনা,প্রসাদ ও পাঁচ সহ¯্রাধিক ভক্তের মাঝে ভোগ বিতরণ। গত চার বছর ধরে মন্দিরটির পুনঃনির্মাণের কাজ চলেছে। দুই কোটি টাকার উপরে ব্যয় দেশের অন্যতম এ মন্দির উদ্বোধন ছিল দেশের নানা প্রান্তের সনতানীদের মিলন মেলা।

আশ্রম পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা ও সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব সিংহ টনি জানান,আশ্রমটি ১১৮ বছর আগে ১৩১৪ বঙ্গাব্দে পাগল গোপাল গোস্বামী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। তারও বেশ কয়েক বছর আগে নিত্যলিলা প্রবিষ্ট পাগলা গোপাল গোস্বামী এই মন্দিরের তৎকালীন জঙ্গলময় স্থানে আশ্রয় নেন। তাঁকে সম্মান জানিয়ে এ অঞ্চলের তৎকালীন রাণী হেমন্ত কুমারীর পক্ষ থেকে ২.৪ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু পাগল গোস্বামী নিজের নামে না নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের নামে বরাদ্দ গ্রহণ করেন। তখন থেকে আশ্রমটির যাত্রা। পরে কয়েক সদস্যের পরিচালনায় আশ্রমের কার্যক্রম চলে। ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিবন্ধন হয়। তারা আরও জানান,গোপাল গোস্বামী এই আশ্রম থেকে তীর্থে গিয়ে ভারতের নদীয়ায় দেহ ত্যাগ করেন। আশ্রমের উদ্যোগে সেখান থেকে মাটি এনে তাঁর নামে স্মৃতি মন্দির করা হয়েছে আশ্রমটিতে। তাঁর প্রয়াণ দিনকে স্মরণ করে আশ্রমের আয়োজনে এবার ৯৮ তম নাম ও লীলা কীর্তন উৎসব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
কর্মসূচিতে উপস্থিত নিশিকান্ত রায়, অধ্যাপক ¯েœহময় গুহনিয়োগী, সুশীল চন্দ্র দাস, ডা. জহর লাল চৌধুরী,অলক কুমার চৌধুরী, লিটন সিংহসহ অনেকে জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটি সনাতনী আশ্রয়হীনদের আশ্রয় আর অনাথদের নিরাপদ ঠিকানা। এ পথে চলতে অনেক সনাতনী এই মন্দিরে এসে দ্বিধাহীন সেবা গ্রহণ করেন। প্রতিদিন সেবা গ্রহিতাদের সেবায় প্রস্তুত থাকে প্রসাদ। আশ্রমে সর্বদা সেবাদান কাজে অন্তত ১০জন নিয়োজিত থাকেন। স্থানীয় ভক্তগণ প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা দুইবার প্রার্থনা করতে ছুটে আসেন এ আশ্রমের মন্দিরে। প্রার্থণা করে দিন শুরু করেন অসংখ্য সনাতনী। এ অঞ্চলের সনাতনীদের কাছে আশ্রমটির গুরুত্ব অনেক। কিন্তু এই দীর্ঘ সময়ে টিনশেড থেকে পাকা রূপে দুইবার উন্নয়ন হলেও দৃশ্যমান বড় উন্নয়ন আগে হয়নি। এইবার চার বছর ধরে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের অন্যতম সৌন্দর্যের মন্দির নির্মাণ হলো। ভক্তদের দান সহযোগিতায় মন্দিরটি সৌন্দর্যে এবার অনন্য হয়ে উঠলো। সারাদেশ থেকে ভক্তদের আগমনে মন্দিরের উদ্বোধনী মূহূর্ত পরিণত হয়েছিল সনাতনীদের মিলন মেলা। দেশের অন্যতম এ মন্দির রাতের রঙিন বাতির আলোর সৌন্দর্য চোখ ধাঁধিয়ে যায়।