ঢাকা ০৭:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মধুপুরে ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষক

মধুপুর করেসপন্ডেন্ট শালবনবার্তা২৪.কম
  • আপডেট সময় : ০১:৫৩:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫ ৯৯ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের মধুপুরে আমন ধানের মাঠে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে কারেন্ট পোকার আক্রমণ। হঠাৎ করেই ধানক্ষেতে এই পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক স্প্রে করেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না তারা। এতে নষ্ট হচ্ছে স্বপ্নের ফসল, বাড়ছে হতাশা।

বুধবার সরেজমিনে মধুপুর উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নের আমন ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, একের পর এক জমিতে ধানগাছ শুকিয়ে গেছে। ক্ষেতে ভিড় জমিয়েছে কারেন্ট পোকার ঝাঁক। নষ্ট হয়ে গেছে কৃষকের সোনার ফসল।

কৃষকরা জানান, এবছর আমন মৌসুমের শুরুতে পানি সংকট বা চারা রোপনে তেমন সমস্যা ছিল না। তবে সারের দাম ছিল অনেক বেশি। তবুও কষ্ট করে বেশি দামে সার কিনে ধান চাষ করছেন তারা। কিন্তু হঠাৎ কারেন্ট পোকার আক্রমণে সব পরিশ্রম যেন মাটি হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার গোলবাড়ী ইউনিয়নের সংগ্রামশিমুল গ্রামের কৃষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘ধানগাছ শুরু থেকে ভালোই ছিল, কিন্তু আমার অন্যদিকে কলাবাগান এবং লাউ বাগানের কাজের চাপে কয়েকদিন মাত্র জমিতে যেতে পারিনি। এর মধ্যেই কারেন্ট পোকা সব শেষ করে দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আর কিছুদিন পরেই ধান কাটার উপযুক্ত হতো। কিন্তু কারেন্ট পোকা সব শেষ করে দিলো। দিনে দুইবার করে ওষুধ দিচ্ছি তাও কোনো কাজ হচ্ছে না। গোড়া থেকে গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। এভাবে নষ্ট হলে ধানের খরচই উঠবে না।’

উপজেলার ভট্টবাড়ির কৃষক মুন্ন ইসলাম বলেন, ‘আমার ধানক্ষেতে একদিকে ইঁদুরের হানা, আরেকদিকে কারেন্ট পোকার হানা। তাদের অত্যাচারে ধান নিয়ে হতাশায় পরেছি। তারমধ্যে আবার কীটনাশক কিনতে পড়তে হচ্ছে বিভ্রান্তিতে। বাজারে যত কম্পানির ওষুধ নামছে, কোনটা আসল আর কোনটা নকল বুঝা বড় দায়। নকল ওষুধ কিনে টাকা নষ্ট করছি, ফসলেরও কাজ হচ্ছে না।’

এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, ধানের চারা রোপণের আগেই কিছু ব্যবস্থা নিলে কারেন্ট পোকার আক্রমণ রোধ করা সম্ভব। এর মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্বে চারা রোপণ, আইলের মাঝে বিলি কেটে দেওয়া, যথাযথ সার প্রয়োগ, আগাম ও প্রতিরোধে সক্ষম জাতের চারা রোপণের ব্যবস্থা করা হলে বা কৃষি অফিসের দেয়া পরামর্শ মেনে কৃষক ধানচাষ করলে এত পোকার আক্রমণ হতো না। এরপরেও কৃষি কর্মকর্তাগণ এলাকায় এলাকায় গিয়ে পোকা দমনের পরামর্শ দিচ্ছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!

মধুপুরে ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষক

আপডেট সময় : ০১:৫৩:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

টাঙ্গাইলের মধুপুরে আমন ধানের মাঠে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে কারেন্ট পোকার আক্রমণ। হঠাৎ করেই ধানক্ষেতে এই পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক স্প্রে করেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না তারা। এতে নষ্ট হচ্ছে স্বপ্নের ফসল, বাড়ছে হতাশা।

বুধবার সরেজমিনে মধুপুর উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নের আমন ক্ষেত ঘুরে দেখা যায়, একের পর এক জমিতে ধানগাছ শুকিয়ে গেছে। ক্ষেতে ভিড় জমিয়েছে কারেন্ট পোকার ঝাঁক। নষ্ট হয়ে গেছে কৃষকের সোনার ফসল।

কৃষকরা জানান, এবছর আমন মৌসুমের শুরুতে পানি সংকট বা চারা রোপনে তেমন সমস্যা ছিল না। তবে সারের দাম ছিল অনেক বেশি। তবুও কষ্ট করে বেশি দামে সার কিনে ধান চাষ করছেন তারা। কিন্তু হঠাৎ কারেন্ট পোকার আক্রমণে সব পরিশ্রম যেন মাটি হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার গোলবাড়ী ইউনিয়নের সংগ্রামশিমুল গ্রামের কৃষক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘ধানগাছ শুরু থেকে ভালোই ছিল, কিন্তু আমার অন্যদিকে কলাবাগান এবং লাউ বাগানের কাজের চাপে কয়েকদিন মাত্র জমিতে যেতে পারিনি। এর মধ্যেই কারেন্ট পোকা সব শেষ করে দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আর কিছুদিন পরেই ধান কাটার উপযুক্ত হতো। কিন্তু কারেন্ট পোকা সব শেষ করে দিলো। দিনে দুইবার করে ওষুধ দিচ্ছি তাও কোনো কাজ হচ্ছে না। গোড়া থেকে গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। এভাবে নষ্ট হলে ধানের খরচই উঠবে না।’

উপজেলার ভট্টবাড়ির কৃষক মুন্ন ইসলাম বলেন, ‘আমার ধানক্ষেতে একদিকে ইঁদুরের হানা, আরেকদিকে কারেন্ট পোকার হানা। তাদের অত্যাচারে ধান নিয়ে হতাশায় পরেছি। তারমধ্যে আবার কীটনাশক কিনতে পড়তে হচ্ছে বিভ্রান্তিতে। বাজারে যত কম্পানির ওষুধ নামছে, কোনটা আসল আর কোনটা নকল বুঝা বড় দায়। নকল ওষুধ কিনে টাকা নষ্ট করছি, ফসলেরও কাজ হচ্ছে না।’

এ বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, ধানের চারা রোপণের আগেই কিছু ব্যবস্থা নিলে কারেন্ট পোকার আক্রমণ রোধ করা সম্ভব। এর মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্বে চারা রোপণ, আইলের মাঝে বিলি কেটে দেওয়া, যথাযথ সার প্রয়োগ, আগাম ও প্রতিরোধে সক্ষম জাতের চারা রোপণের ব্যবস্থা করা হলে বা কৃষি অফিসের দেয়া পরামর্শ মেনে কৃষক ধানচাষ করলে এত পোকার আক্রমণ হতো না। এরপরেও কৃষি কর্মকর্তাগণ এলাকায় এলাকায় গিয়ে পোকা দমনের পরামর্শ দিচ্ছেন।