দেনমোহর না দিলে স্ত্রীর সঙ্গে থাকা কি বৈধ?

- আপডেট সময় : ০৩:৫৯:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ২০ বার পড়া হয়েছে

শরীয়তসম্মতভাবে বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর স্বামীর ওপর স্ত্রীর দেনমোহর আদায়ের দায়িত্ব অর্পিত হয়। ইসলামী ফিকহে একে বলা হয় “মোহর”। এটি কেবলমাত্র একটি আর্থিক প্রতিদান নয়, বরং এটি নারীকে তার স্বামীর অধীনে ন্যায্য মর্যাদা ও অধিকার প্রদানের প্রতীক।
বিয়ের সঙ্গে সঙ্গেই মোহর পরিশোধ করা উত্তম। তবে যদি তা সঙ্গে সঙ্গে সম্ভব না হয়, তাহলে নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া উচিত। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, অনেক মুসলমান বিয়ের উৎসবে অযথা অপচয় করলেও দেনমোহর পরিশোধের ক্ষেত্রে চরম অবহেলা প্রদর্শন করেন। ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে এটি শুধু অন্যায়ই নয়, বরং এক প্রকার নৈতিক অপরাধও বটে।
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “বিয়ের সময় মোহর নির্ধারণ করা হলে তা যথাসম্ভব দ্রুত পরিশোধ করো।” এমনকি এক সাহাবি যখন বিয়ে করতে চাইলেন কিন্তু তার কাছে মোহর হিসেবে কিছুই ছিল না, তখন নবীজি তাকে নির্দেশ দেন, “একটি লোহার আংটি হলেও জোগাড় করো।” (সহিহ বুখারি)।
শরীয়তের দৃষ্টিতে, মোহর পরিশোধ না করলেও বিয়ে বৈধ থাকে। তবে স্ত্রী চাইলে মোহর আদায় না হওয়া পর্যন্ত স্বামীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন থেকে বিরত থাকতে পারেন। পাশাপাশি, সে অবস্থাতেও স্বামীকে স্ত্রীর ভরণ-পোষণ বহন করতে হবে। কারণ মোহর ও ভরণ-পোষণ দুটি ভিন্ন অধিকার।
যদি কোনো স্বামী মোহর পরিশোধে গড়িমসি করে, কিংবা একেবারে পরিশোধ না করারই নিয়ত করে, তাহলে ইসলামী বিধান অনুযায়ী সে গুরুতর অপরাধে লিপ্ত হয়। এমনকি হাদিসে এসেছে, “যে ব্যক্তি মোহর আদায়ের নিয়ত ছাড়াই কোনো নারীকে বিয়ে করে, আল্লাহ তাআলার কাছে সে ব্যভিচারীরূপে গণ্য হবে।” (ইমাম আহমদ)।
অতএব, মোহর কেবল একটি সামাজিক প্রথা নয়, বরং এটি ইসলামী ন্যায়বিচারের একটি অপরিহার্য অংশ। এর যথাযথ পরিশোধের মাধ্যমেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ দৃঢ় হয়।