ঢাকা ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন কমিশনের কর্মশালা

প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে যে মতামত আসল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শালবনবার্তা২৪.কম
  • আপডেট সময় : ০৭:০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫ ৪৯ বার পড়া হয়েছে

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মূলত প্রবাসীদের জন্য প্রক্সি ভোট (প্রবাসীদের নির্ধারিত ব্যক্তি তার হয়ে ভোট দেবেন), অনলাইন ভোট এবং পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি (ডাক যোগে ভোট) নিয়ে আলোচনা হয়। এতে ১০টি সংস্থা তাদের মতামত দেয়।

তবে প্রক্সি ভোট ব্যবস্থায় আগ্রহ দেখায়নি ১০ সংস্থার প্রতিনিধিরা। যদিও প্রবাসীদের ভোটদানে প্রক্সি ভোটেই বেশি আগ্রহ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু কর্মশালায় অংশগ্রহণ করা প্রতিনিধিদের তিনটি দলই প্রক্সি ভোট ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বলেছে। তারা অনলাইন ভোট ব্যবস্থাকে এগিয়ে রেখেছে বলে শালবনবার্ত২৪.কমকে জানিয়েছেন কর্মশালায় অংশ নেওয়া এক প্রতিনিধি।

এর আগে মঙ্গলবার (০৮ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোটদান পদ্ধতি নির্ধারণের কর্মশালা শুরু হয়। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ, এম, এম, নাসির উদ্দিন। এতে অংশ নেয়- এমআইএসটি, ইউএনডিপি, ফরেন অ্যাফেয়ার্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও পার্লামেন্ট অ্যাফেয়ার্স, বুয়েট, পোস্ট অফিস, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বাংলা নেট লিমিটেড।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মশালায় অংশ নেওয়া ওই প্রতিনিধি শালবনবার্ত২৪.কমকে বলেন, “নির্বাচন কমিশন কর্মশালায় প্রবাসীদের ভোটদানে তিনটি পদ্ধতি উপস্থাপন করে। তবে নির্বাচন কমিশন প্রক্সি ভোটের পক্ষে জোর দিলেও কর্মশালায় অংশগ্রহণ করা প্রতিনিধিরা এতে সায় দেয়নি। পোস্টাল ব্যালট কার্যকর না হলেও সবাই অনলাইন ভোট ব্যবস্থাকে প্রধান্য দিয়েছে। এমনকি ১০ সংস্থার প্রতিনিধিদের দিয়ে তিনটি টিম করা হলেও টিমের পক্ষ থেকে অনলাইন ভোট ব্যবস্থাকে এগিয়ে রাখে সবাই।

প্রতিনিধিদের প্রক্সি ভোটে আগ্রহ না থাকার কারন উল্লেখ করে তিনি জানান, “একজন প্রবাসী রেজিস্ট্রেশন করে প্রক্সি ভোট দিতে কাউকে নির্ধারণ করে থাকলেও; তার মনোনীত ব্যক্তি তার ভোটটি অন্য কাউকেও দিয়ে দিতে পারেন। অপরদিকে অনলাইন ভোট ব্যবস্থা থাকলে প্রবাসী ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সরাসরি ভোট দিতে পারবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এক কর্মকর্তা শালবনবার্ত২৪.কমকে জানান, ইসির পক্ষ থেকে কর্মশালায় পোস্টাল ব্যালট, প্রক্সি ভোট এবং অনলাইন ভোটিং ব্যবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু কর্মশালায় অংশ নেওয়া প্রতিনিধিরা অনলাইন ব্যবস্থাকে এগিয়ে রেখেছে। পোস্টাল ব্যালটের পক্ষে তারা মতামত দিয়েছে। তবে পোস্টাল ব্যালটের পদ্ধতি বিদ্যমান থাকলেও আজ পর্যন্ত একটি ভোটও পড়েনি। এই পদ্ধতিতে কেউ ভোট দিতে চায় না।

তিনি জানান, কর্মশালায় এই তিন পদ্ধতিতেই পাইলটিং করার প্রস্তাব এসেছে। এই তিন সিস্টেমে প্রবাসীদের ভোট নিতে মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং ব্রুনাইয়ে পাইলটিং করা হতে পারে। এর মধ্যে যেই বিষয়টি গ্রহণযোগ্যতা এবং কার্যকর হবে সেটিই পরবর্তীতে সম্প্রসারণ করা হবে। তাছাড়া এই তিন সিস্টেম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোরও মতামত নেওয়া হবে। প্রবাসীদেরও মতামত নেওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে তিনটি বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সেগুলো হলো সময়ের মধ্যে সম্পাদনযোগ্য একটি পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি, অনলাইন পদ্ধতি এবং প্রক্সি ভোটিং। সব প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব হলে প্রক্সি ভোট পদ্ধতিটি মোটামুটি পরিসরে আর বাকি দুটি পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে চায় ইসি।

 

শালবনবার্ত২৪.কম/এআর

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

নির্বাচন কমিশনের কর্মশালা

প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে যে মতামত আসল

আপডেট সময় : ০৭:০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মূলত প্রবাসীদের জন্য প্রক্সি ভোট (প্রবাসীদের নির্ধারিত ব্যক্তি তার হয়ে ভোট দেবেন), অনলাইন ভোট এবং পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি (ডাক যোগে ভোট) নিয়ে আলোচনা হয়। এতে ১০টি সংস্থা তাদের মতামত দেয়।

তবে প্রক্সি ভোট ব্যবস্থায় আগ্রহ দেখায়নি ১০ সংস্থার প্রতিনিধিরা। যদিও প্রবাসীদের ভোটদানে প্রক্সি ভোটেই বেশি আগ্রহ বর্তমান নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু কর্মশালায় অংশগ্রহণ করা প্রতিনিধিদের তিনটি দলই প্রক্সি ভোট ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বলেছে। তারা অনলাইন ভোট ব্যবস্থাকে এগিয়ে রেখেছে বলে শালবনবার্ত২৪.কমকে জানিয়েছেন কর্মশালায় অংশ নেওয়া এক প্রতিনিধি।

এর আগে মঙ্গলবার (০৮ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউটে প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোটদান পদ্ধতি নির্ধারণের কর্মশালা শুরু হয়। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ, এম, এম, নাসির উদ্দিন। এতে অংশ নেয়- এমআইএসটি, ইউএনডিপি, ফরেন অ্যাফেয়ার্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও পার্লামেন্ট অ্যাফেয়ার্স, বুয়েট, পোস্ট অফিস, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বাংলা নেট লিমিটেড।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মশালায় অংশ নেওয়া ওই প্রতিনিধি শালবনবার্ত২৪.কমকে বলেন, “নির্বাচন কমিশন কর্মশালায় প্রবাসীদের ভোটদানে তিনটি পদ্ধতি উপস্থাপন করে। তবে নির্বাচন কমিশন প্রক্সি ভোটের পক্ষে জোর দিলেও কর্মশালায় অংশগ্রহণ করা প্রতিনিধিরা এতে সায় দেয়নি। পোস্টাল ব্যালট কার্যকর না হলেও সবাই অনলাইন ভোট ব্যবস্থাকে প্রধান্য দিয়েছে। এমনকি ১০ সংস্থার প্রতিনিধিদের দিয়ে তিনটি টিম করা হলেও টিমের পক্ষ থেকে অনলাইন ভোট ব্যবস্থাকে এগিয়ে রাখে সবাই।

প্রতিনিধিদের প্রক্সি ভোটে আগ্রহ না থাকার কারন উল্লেখ করে তিনি জানান, “একজন প্রবাসী রেজিস্ট্রেশন করে প্রক্সি ভোট দিতে কাউকে নির্ধারণ করে থাকলেও; তার মনোনীত ব্যক্তি তার ভোটটি অন্য কাউকেও দিয়ে দিতে পারেন। অপরদিকে অনলাইন ভোট ব্যবস্থা থাকলে প্রবাসী ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সরাসরি ভোট দিতে পারবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এক কর্মকর্তা শালবনবার্ত২৪.কমকে জানান, ইসির পক্ষ থেকে কর্মশালায় পোস্টাল ব্যালট, প্রক্সি ভোট এবং অনলাইন ভোটিং ব্যবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু কর্মশালায় অংশ নেওয়া প্রতিনিধিরা অনলাইন ব্যবস্থাকে এগিয়ে রেখেছে। পোস্টাল ব্যালটের পক্ষে তারা মতামত দিয়েছে। তবে পোস্টাল ব্যালটের পদ্ধতি বিদ্যমান থাকলেও আজ পর্যন্ত একটি ভোটও পড়েনি। এই পদ্ধতিতে কেউ ভোট দিতে চায় না।

তিনি জানান, কর্মশালায় এই তিন পদ্ধতিতেই পাইলটিং করার প্রস্তাব এসেছে। এই তিন সিস্টেমে প্রবাসীদের ভোট নিতে মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং ব্রুনাইয়ে পাইলটিং করা হতে পারে। এর মধ্যে যেই বিষয়টি গ্রহণযোগ্যতা এবং কার্যকর হবে সেটিই পরবর্তীতে সম্প্রসারণ করা হবে। তাছাড়া এই তিন সিস্টেম নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোরও মতামত নেওয়া হবে। প্রবাসীদেরও মতামত নেওয়া হতে পারে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে তিনটি বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সেগুলো হলো সময়ের মধ্যে সম্পাদনযোগ্য একটি পোস্টাল ব্যালট পদ্ধতি, অনলাইন পদ্ধতি এবং প্রক্সি ভোটিং। সব প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব হলে প্রক্সি ভোট পদ্ধতিটি মোটামুটি পরিসরে আর বাকি দুটি পরীক্ষামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে চায় ইসি।

 

শালবনবার্ত২৪.কম/এআর