ঢাকা ০১:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

টাঙ্গাইলে জামাই মেলায় দর্শনার্থীদের ঢল

টাঙ্গাইল করেসপন্ডেন্ট শালবনবার্তা২৪.কম
  • আপডেট সময় : ০৭:১৪:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ৫৫ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলে প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকাল থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার রসুলপুর বাছিরননেছা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তিন দিনব্যাপী এই মেলা শুরু হয়। জামাই-বউ ছাড়াও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে মেলা প্রাঙ্গণ উৎসবে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, প্রায় দেড়শ’ বছর ধরে সনাতন পঞ্জিকা অনুসারে প্রতিবছর ১১, ১২ ও ১৩ বৈশাখ রসুলপুরে তিন দিনব্যাপী জামাই মেলা বসে। মেলাকে কেন্দ্র করে আশপাশের অন্তত ৩০ গ্রামের বিবাহিত মেয়েরা তাদের স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন। আর মেলা উপলক্ষে জামাইকে বরণ করে নেওয়ার জন্য শ্বশুর-শাশুড়িরাও বেশ আগে থেকেই নেন নানা প্রস্তুতি। ঐতিহ্য অনুযায়ী মেলার সময় শাশুড়িরা মেয়ের জামাইয়ের হাতে কিছু টাকা দেন। সেই টাকার সঙ্গে জামাইরা তাদের টাকা দিয়ে মেলা থেকে শ্বশুরবাড়ির সবার জন্য বাজার করেন। মেলাটি জামাই-বউসহ সবাই খুব আনন্দে উপভোগ করেন।

মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন দোকানিরা। বিভিন্ন ধরনের খেলনা, প্রসাধনী, খাবারের দোকান, মিষ্টির দোকানসহ ছোট-বড় দোকান বসেছে। বৈশাখের ভ্যাপসা গরমের মাঝেও মেলায় হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। কেউ ঘুরছেন আবার কেউ বিভিন্ন পণ্য কিনছেন। মেলায় আসতে পেরে খুশি দর্শনার্থীরা।

মিলন মাহমুদ নামের এক দর্শনার্থী বলেন, মেলাটি জামাই মেলা নামে পরিচিত। মেলাটিকে কেন্দ্র করে এই এলাকার জামাইরা একত্রিত হয়। এমন মেলায় আসতে পেয়ে খুবই আনন্দিত।

রসুলপুরের বাসিন্দা লেখক রাশেদ রহমান বলেন, প্রায় দেড়শ বছর ধরে এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এলাকার মানুষের কাছে ঈদ বা পূজা-পার্বণের মতোই এই মেলা একটি উৎসব। মেলাটি বৈশাখী মেলা হিসেবে শুরু হলেও এখন এটি জামাইমেলা হিসেবে পরিচিত।

আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান বলেন, মেলা সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন দোকানিরা। তারা খাবারের দোকান, মিষ্টিজাতীয় পণ্যের দোকানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খেলনা, প্রসাধনীর দোকানও দিয়েছেন। এ ছাড়া মেলায় একাধিক ফার্নিচারের দোকানও বসেছে। রসুলপুরের এই মেলাটি বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম। আগামী রোববার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ মেলা শেষ হবে। তিন দিনে মেলায় ২ কোটি টাকার ওপরে বাণিজ্য হবে।

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এআর

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

error: Content is protected !!

টাঙ্গাইলে জামাই মেলায় দর্শনার্থীদের ঢল

আপডেট সময় : ০৭:১৪:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

টাঙ্গাইলে প্রায় দেড়শ বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকাল থেকে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার রসুলপুর বাছিরননেছা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তিন দিনব্যাপী এই মেলা শুরু হয়। জামাই-বউ ছাড়াও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে মেলা প্রাঙ্গণ উৎসবে পরিণত হয়েছে।

জানা গেছে, প্রায় দেড়শ’ বছর ধরে সনাতন পঞ্জিকা অনুসারে প্রতিবছর ১১, ১২ ও ১৩ বৈশাখ রসুলপুরে তিন দিনব্যাপী জামাই মেলা বসে। মেলাকে কেন্দ্র করে আশপাশের অন্তত ৩০ গ্রামের বিবাহিত মেয়েরা তাদের স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন। আর মেলা উপলক্ষে জামাইকে বরণ করে নেওয়ার জন্য শ্বশুর-শাশুড়িরাও বেশ আগে থেকেই নেন নানা প্রস্তুতি। ঐতিহ্য অনুযায়ী মেলার সময় শাশুড়িরা মেয়ের জামাইয়ের হাতে কিছু টাকা দেন। সেই টাকার সঙ্গে জামাইরা তাদের টাকা দিয়ে মেলা থেকে শ্বশুরবাড়ির সবার জন্য বাজার করেন। মেলাটি জামাই-বউসহ সবাই খুব আনন্দে উপভোগ করেন।

মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন দোকানিরা। বিভিন্ন ধরনের খেলনা, প্রসাধনী, খাবারের দোকান, মিষ্টির দোকানসহ ছোট-বড় দোকান বসেছে। বৈশাখের ভ্যাপসা গরমের মাঝেও মেলায় হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। কেউ ঘুরছেন আবার কেউ বিভিন্ন পণ্য কিনছেন। মেলায় আসতে পেরে খুশি দর্শনার্থীরা।

মিলন মাহমুদ নামের এক দর্শনার্থী বলেন, মেলাটি জামাই মেলা নামে পরিচিত। মেলাটিকে কেন্দ্র করে এই এলাকার জামাইরা একত্রিত হয়। এমন মেলায় আসতে পেয়ে খুবই আনন্দিত।

রসুলপুরের বাসিন্দা লেখক রাশেদ রহমান বলেন, প্রায় দেড়শ বছর ধরে এই মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এলাকার মানুষের কাছে ঈদ বা পূজা-পার্বণের মতোই এই মেলা একটি উৎসব। মেলাটি বৈশাখী মেলা হিসেবে শুরু হলেও এখন এটি জামাইমেলা হিসেবে পরিচিত।

আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান বলেন, মেলা সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন দোকানিরা। তারা খাবারের দোকান, মিষ্টিজাতীয় পণ্যের দোকানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের খেলনা, প্রসাধনীর দোকানও দিয়েছেন। এ ছাড়া মেলায় একাধিক ফার্নিচারের দোকানও বসেছে। রসুলপুরের এই মেলাটি বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম। আগামী রোববার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ মেলা শেষ হবে। তিন দিনে মেলায় ২ কোটি টাকার ওপরে বাণিজ্য হবে।

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এআর