ঢাকা ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাবি’র শিক্ষার্থী শহীদ আবু বকর সড়কের নামফলক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শালবনবার্তা২৪.কম
  • আপডেট সময় : ০৩:২১:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫ ১৭০ বার পড়া হয়েছে

২০১০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত মধুপুরের মেধাবী শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিকের স্মৃতি সড়কের ভেঙ্গে যাওয়া নামফলক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মধুপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেনের উদ্যোগে এ নামফলক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলো।

মধুপুর উপজেলা শহর থেকে ৩ কি.মি পশ্চিমে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের গোলাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে উত্তর দিকে চলে যাওয়া শহীদ আবুবকরের বাড়ির পথের ২০০ গজ মাটির সড়কটি শহীদ আবুবকর সড়ক। গত ২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি শহীদ আবুবকরের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে পরিবার ও স্থানীয়দের আয়োজনের কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি এ সড়কটির আবুবকর সড়ক নামকরণ ও ফলক উম্মোচন করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম হওয়া শহীদ আবু বকর সিদ্দিক। তিনি গোলাবাড়ী গ্রামের দিন মজুর রুস্তম আলীর ছেলে।

মাওলানা ভসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় টাঙ্গাইল থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে চাকরিরত আবুবকরের ছোট ভাই ওমর ফারুক জানান, ২০১০ সালের ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের গুলাগুলিতে স্যার এ. এফ. রহমান হলের ৪০৪ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র আবু বকর কক্ষে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হন। মাথার পেছনে লাগা গুলিতে অস্বাভাবিক রক্ত ক্ষরণে শহীদ হন উত্তর টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার এই মেধাবী মুখ। তৎকালীন ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আবু বকরের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকীর কর্মসূচিতে এসে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে আমাদের বাড়ির এই সড়ককে “শহীদ আবু বকর স্মৃতি সড়ক” নামে উদ্বোধন করেন।

প্রায় দুই মাস আগে একটি সড়ক দূর্ঘটনায় ট্রাকের ধাক্কায় স্মৃতি ফলকটি ভেঙ্গে যায়। মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.জোবায়ের হোসেনের বিষয়টি দৃষ্টি গোচর হয়। তিনি উদ্যোগ নেন মেরামতের। বাড়ির পাশের কবরস্থানের আবুবকরের কবরটিও একই সাথে মেরামতের ও রং করার উদ্যোগ নিয়ে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করেন। তার এমন উদ্যোগকে স্থানীয়রা প্রশংসা করছেন।

শুক্রবার পুনর্নির্মিত ফলকটি উম্মোচন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের হোসেন। তার সাথে এ সময় উপস্থিত ছিলেন পিআইও রাজীব আল রানা,সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার আব্রারুল হক শিমুল, আবু বকরের বাবা রুস্তম আলী, বড় ভাই আব্বাস আলী, ছোট ভাই ওমর ফারুক. শালবনবার্তা২৪.কমের সম্পাদক ও যুগান্তর প্রতিনিধি এস.এম শহীদ, কলেজ শিক্ষক আবু সাঈদ, ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম সোহেল জোয়াদ্দার, মাদরাসা প্রধান আমিনুল ইসলামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

ফলক উম্মোচন শেষে উপস্থিত সবাইকে উদ্দেশ্য করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “আবু বকরের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে সড়কটির নামকরণ করে ফলক স্থাপন করা হয়েছিল। ভেঙ্গে যাওয়া সেই নামকলক পরিবারের ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা করেছি। এ কাজের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের সেই দাবির সাথে একত্ন হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।” পরে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সবাই কিছুক্ষণ নিরবতা পালন ও ফাতেহা পাঠ করেন। শহীদ আবুবকরের বিদেহী আত্নার শান্তি কামনায় দোয়া এ সময় দোয়া করা হয়।দোয়া পরিচালনা করেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতী মো. শওকত আলী।

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এএস

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :
error: Content is protected !!

ঢাবি’র শিক্ষার্থী শহীদ আবু বকর সড়কের নামফলক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত

আপডেট সময় : ০৩:২১:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

২০১০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত মধুপুরের মেধাবী শিক্ষার্থী আবু বকর সিদ্দিকের স্মৃতি সড়কের ভেঙ্গে যাওয়া নামফলক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে মধুপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেনের উদ্যোগে এ নামফলক পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলো।

মধুপুর উপজেলা শহর থেকে ৩ কি.মি পশ্চিমে টাঙ্গাইল-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের গোলাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশ দিয়ে উত্তর দিকে চলে যাওয়া শহীদ আবুবকরের বাড়ির পথের ২০০ গজ মাটির সড়কটি শহীদ আবুবকর সড়ক। গত ২০১১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি শহীদ আবুবকরের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে পরিবার ও স্থানীয়দের আয়োজনের কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ভিসি এ সড়কটির আবুবকর সড়ক নামকরণ ও ফলক উম্মোচন করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রথম হওয়া শহীদ আবু বকর সিদ্দিক। তিনি গোলাবাড়ী গ্রামের দিন মজুর রুস্তম আলীর ছেলে।

মাওলানা ভসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় টাঙ্গাইল থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে চাকরিরত আবুবকরের ছোট ভাই ওমর ফারুক জানান, ২০১০ সালের ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের গুলাগুলিতে স্যার এ. এফ. রহমান হলের ৪০৪ নং কক্ষের আবাসিক ছাত্র আবু বকর কক্ষে থাকা অবস্থায় গুলিবিদ্ধ হন। মাথার পেছনে লাগা গুলিতে অস্বাভাবিক রক্ত ক্ষরণে শহীদ হন উত্তর টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার এই মেধাবী মুখ। তৎকালীন ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আবু বকরের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকীর কর্মসূচিতে এসে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে আমাদের বাড়ির এই সড়ককে “শহীদ আবু বকর স্মৃতি সড়ক” নামে উদ্বোধন করেন।

প্রায় দুই মাস আগে একটি সড়ক দূর্ঘটনায় ট্রাকের ধাক্কায় স্মৃতি ফলকটি ভেঙ্গে যায়। মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.জোবায়ের হোসেনের বিষয়টি দৃষ্টি গোচর হয়। তিনি উদ্যোগ নেন মেরামতের। বাড়ির পাশের কবরস্থানের আবুবকরের কবরটিও একই সাথে মেরামতের ও রং করার উদ্যোগ নিয়ে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করেন। তার এমন উদ্যোগকে স্থানীয়রা প্রশংসা করছেন।

শুক্রবার পুনর্নির্মিত ফলকটি উম্মোচন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবায়ের হোসেন। তার সাথে এ সময় উপস্থিত ছিলেন পিআইও রাজীব আল রানা,সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার আব্রারুল হক শিমুল, আবু বকরের বাবা রুস্তম আলী, বড় ভাই আব্বাস আলী, ছোট ভাই ওমর ফারুক. শালবনবার্তা২৪.কমের সম্পাদক ও যুগান্তর প্রতিনিধি এস.এম শহীদ, কলেজ শিক্ষক আবু সাঈদ, ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম সোহেল জোয়াদ্দার, মাদরাসা প্রধান আমিনুল ইসলামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

ফলক উম্মোচন শেষে উপস্থিত সবাইকে উদ্দেশ্য করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “আবু বকরের স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে সড়কটির নামকরণ করে ফলক স্থাপন করা হয়েছিল। ভেঙ্গে যাওয়া সেই নামকলক পরিবারের ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ব্যবস্থা করেছি। এ কাজের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণের সেই দাবির সাথে একত্ন হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছি।” পরে কবরের পাশে দাঁড়িয়ে সবাই কিছুক্ষণ নিরবতা পালন ও ফাতেহা পাঠ করেন। শহীদ আবুবকরের বিদেহী আত্নার শান্তি কামনায় দোয়া এ সময় দোয়া করা হয়।দোয়া পরিচালনা করেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম ও মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতী মো. শওকত আলী।

 

শালবনবার্তা২৪.কম/এএস