ঢাকা ০৭:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনুশোচনা নয় – ষড়যন্ত্রেই ভরসা করছে আওয়ামী লীগ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শালবনবার্তা২৪.কম
  • আপডেট সময় : ১২:০৮:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে

দলটি এই ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কথিত ব্যর্থতার ওপর নির্ভর করে নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে।

তবে এই সময়কালে সংঘটিত দমননীতি ও সহিংসতার ঘটনায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের অনুশোচনা বা আত্মসমালোচনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। বিষয়টি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তাদের মতে, দীর্ঘ সাড়ে পনেরো বছরের শাসনে দলটি রাজনীতি থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল, যা ছাত্র ও সাধারণ মানুষের আন্দোলনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পথ খুলে দেয়।

রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনায় রয়েছে যে, ৭৬ বছরের পুরোনো দলটি এখন সবচেয়ে গভীর সংকটে পড়েছে। শীর্ষ নেতৃবৃন্দের অনেকে দেশ ছেড়ে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছেন, বাকিরা মানবতাবিরোধী অপরাধ, হত্যা ও নিপীড়নের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। দেশের অভ্যন্তরে থাকা নেতারাও প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে ভয় পাচ্ছেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’কেই জনগণের সামনে উপস্থাপন করছে, যেন তারা আন্দোলনের দায় থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারে। দলটির ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, শেখ হাসিনা এখনও দলীয় নেতৃত্বে সক্রিয় এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে সামনে রেখে ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণ করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কিন্তু সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বা তাদের মিত্রদের অংশগ্রহণের সুযোগ না রাখায় দলটি বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বড় ইস্যু হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।

আওয়ামী লীগ মনে করে, তারা এখনও দেশের একটি বড় অংশের জনগণের সমর্থন পায়। তাই নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ না থাকলে, সেটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন, মাঠে সক্রিয় রাজনৈতিক অবস্থান ছাড়া এবং ভুল না স্বীকার করে দলটির পুনরুত্থান কঠিন।

বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, শুধুমাত্র ষড়যন্ত্র তত্ত্বে ভর করে জনগণের আস্থা ফেরানো সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ যদি বাস্তবতা বিবেচনা করে নিজেদের কৌশল না বদলায়, তবে তাদের সামনে পুনরায় ঘুরে দাঁড়ানো অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হবে।

এদিকে, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেন, সরকারের পাশাপাশি অন্যান্য সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিরোধ এবং নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অংশগ্রহণকে আরও কঠিন করে তুলেছে। দলটির পক্ষে এখন আন্তর্জাতিক মঞ্চেই তাদের অবস্থান তুলে ধরা সবচেয়ে কার্যকর কৌশল হতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

error: Content is protected !!

অনুশোচনা নয় – ষড়যন্ত্রেই ভরসা করছে আওয়ামী লীগ

আপডেট সময় : ১২:০৮:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫

দলটি এই ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ এবং বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কথিত ব্যর্থতার ওপর নির্ভর করে নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে।

তবে এই সময়কালে সংঘটিত দমননীতি ও সহিংসতার ঘটনায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের অনুশোচনা বা আত্মসমালোচনার ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। বিষয়টি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তাদের মতে, দীর্ঘ সাড়ে পনেরো বছরের শাসনে দলটি রাজনীতি থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল, যা ছাত্র ও সাধারণ মানুষের আন্দোলনের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পথ খুলে দেয়।

রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনায় রয়েছে যে, ৭৬ বছরের পুরোনো দলটি এখন সবচেয়ে গভীর সংকটে পড়েছে। শীর্ষ নেতৃবৃন্দের অনেকে দেশ ছেড়ে বিদেশে আশ্রয় নিয়েছেন, বাকিরা মানবতাবিরোধী অপরাধ, হত্যা ও নিপীড়নের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। দেশের অভ্যন্তরে থাকা নেতারাও প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে ভয় পাচ্ছেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’কেই জনগণের সামনে উপস্থাপন করছে, যেন তারা আন্দোলনের দায় থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারে। দলটির ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, শেখ হাসিনা এখনও দলীয় নেতৃত্বে সক্রিয় এবং তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে সামনে রেখে ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারণ করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কিন্তু সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বা তাদের মিত্রদের অংশগ্রহণের সুযোগ না রাখায় দলটি বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বড় ইস্যু হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।

আওয়ামী লীগ মনে করে, তারা এখনও দেশের একটি বড় অংশের জনগণের সমর্থন পায়। তাই নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ না থাকলে, সেটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন, মাঠে সক্রিয় রাজনৈতিক অবস্থান ছাড়া এবং ভুল না স্বীকার করে দলটির পুনরুত্থান কঠিন।

বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, শুধুমাত্র ষড়যন্ত্র তত্ত্বে ভর করে জনগণের আস্থা ফেরানো সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ যদি বাস্তবতা বিবেচনা করে নিজেদের কৌশল না বদলায়, তবে তাদের সামনে পুনরায় ঘুরে দাঁড়ানো অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং হবে।

এদিকে, সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেন, সরকারের পাশাপাশি অন্যান্য সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিরোধ এবং নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে অংশগ্রহণকে আরও কঠিন করে তুলেছে। দলটির পক্ষে এখন আন্তর্জাতিক মঞ্চেই তাদের অবস্থান তুলে ধরা সবচেয়ে কার্যকর কৌশল হতে পারে।